বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থপাচার রোধে কঠোর প্রশাসন

অর্থপাচার রোধে কঠোর প্রশাসন

ব্যবসায়ীরা যেন কোনোভাবেই বিদেশে অর্থ পাচার করতে না পারে সে বিষয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের শপথ নিতে হবে। এমন আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। বলেছেন, ব্যবসায়ীরা বা সরকারি চাকরিজীবীরা দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে।

ওভার-ইনভয়েস ও আন্ডার-ইনভয়েসের মাধ্যমে বিরাট অংকের টাকা বিদেশে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এখানে কাস্টমস অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ডিজিটালাইজেশন এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সিস্টেমস ডিজিটাল হলে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কমে যায়। দক্ষতা বৃদ্ধি করে ফাঁকির সুযোগ কমাতে হবে।

গতকাল বুধবার ‘আর্ন্তজাতিক কাস্টমস দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ আহ্বান জানান। করোনা মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভার্চুয়াল সেমিনার আয়োজন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

মানিল্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আজ দক্ষিণ কোরিয়া এতো উন্নত হলো, তা কীভাবে সম্ভব হয়েছে? কারণ মানিলন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে তাদের দেশে বড় ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা ছিল। এর মাধ্যমে তারা বৈদেশিক মুদ্রাকে রক্ষা করে ভারী শিল্পের দিকে গেছে। শুধু ইলেকট্রনিক্স নয়, সব ভারী শিল্পে তাদের ভূমিকা রয়েছে। কাজেই আমাদেরও বৈদেশিক মানিল্ডারিংয়ের বিষয়ে কঠোর হতে হবে।

দেশের কর জিডিপি অনুপাত অনেক কম উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, যেটা ১০ শতাংশেও উন্নীত হচ্ছে না। প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল কিংবা ভুটানের চেয়ে অনেক কম। মন্ত্রী বলেন, আমাদের দুই জিনিসের প্রতি নজর দিতে হবে। একটি মানিলন্ডারিং ও কর জিডিপি অনুপাত। এই দুটি বিষয়ে কীভাবে দৃষ্টান্তমূলকভাবে উত্তরণ পেতে পারি, সে বিষয়ে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবেন।

আরও পড়ুনঃ  মি. বেকারের বিরুদ্ধে ৮০ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকির মামলা

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মামুদ চৌধুরী ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনসহ প্রতি বছরের মতো এবারও ডাব্লিউসিও সার্টিফিকেট অফ মেরিট ২০২১ সম্মাননা দেয়া হয় ১৭ রাজস্ব কর্মকর্তা ও তিন সংস্থাকে। এর মধ্যে অর্থনীতি বিট সাংবাদিকদের প্রধান সংগঠন ইকোনিামিক রিপোর্টাস ফোরামও (ইআরএফ) পায়। সম্মাননা গ্রহণ করেন ইআরএফের সভাপতি শারমীন রিনভী এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।

রাজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যে সম্মাননা লাভ করেন কমিশনার শওকত আলী সাদী (রংপুর কাস্টমস), অতিরিক্ত কমিশনার মো. আবদুল হাকিম (কুমিল্লা কাস্টমস), আইসিটি অনুবিভাগের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট মো. ফজলুর রহমান (ঢাকা), যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ তফছির উদ্দিন ভঁঞা (চট্রগ্রাম কাস্টমস), যুগ্ম কমিশনার এস এম শামসুজ্জামান (ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প ঢাকা), উপ কমিশনার আয়েশা আক্তার (ঢাকা কাস্টমস – পশ্চিম), উপ কমিশনার মো. রাকিবুল হাসান (ঢাকা), উপ কমিশনার মো. খকায়রুল আলম (ঢাকা কাস্টমস- পশ্চিম), উপ কমিশনার কাজী রেজাউল হাসান (ঢাকা), উপ কমিশনার সমরজিৎ দাস (ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প, ঢাকা), উপ কমিশনার সম্প্রীতি প্রামানিক (ঢাকা), উপ কমিশনার নূর-এ-হাসনা সানজিদা অনসূয়া (ঢাকা কাস্টমস), উপ কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজ আলম (ঢাকা কাস্টমস,উত্তর), সহকারী কমিশনার মো. মাহবুবুল আলম (ঢাকা কাস্টমস), ভ্যাটের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম (ঢাকা), সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান (ঢাকা কাস্টমস) এবং সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান (ঢাকা)। এছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ও বেনাপোল কাস্টামসকেও সম্মাননা দেয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  আয়কর মেলা শুরু বৃহস্প‌তিবার

এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘তথ্য সংস্কৃতি বিকাশ এবং তথ্য ইকোসিস্টেম বিনির্মাণের মাধ্যমে ডিজিটাল কাস্টমসের সম্প্রসারণ’। বাংলাদেশসহ ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের (ডাব্লিউসিও) সদস্যভুক্ত ১৮৩টি দেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন ২৬ জানুয়ারিকে কাস্টমস দিবস হিসেবে ঘোষণা করার পর থেকেই বাংলাদেশও দিবসটি উদযাপন করছে। এবারে ১৪ম আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উদযাপিত হয়।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন