শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও খাবার ভাতা দেওয়াসহ ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটে নেমেছে নৌ-শ্রমিকরা। গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শ্রমিকদের সাথে নিয়ে ধর্মঘট শুরু করেছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। ধর্মঘটের করণে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম গণমাধ্যমকে জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে তারা ১১ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন কর যাচ্ছেন। কিন্তু লঞ্চ মালিকপক্ষ শুধু তাদের আশ্বাসই দিয়েছে, কোনো বাস্তবায়ন করেনি। এছাড়া গত বুধবার সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বসলেও তার কোনো সুরাহা হয়নি। তাই শ্রমিকরা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধর্মঘটে যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়ায় আমরা ধর্মঘটে এগিয়েছি।
তিনি আরও জানান আমরা এর আগেও আন্দোলন করেছিলাম, ধর্মঘটের ডাকও দিয়েছিলাম। তখন মালিকপক্ষ জানিয়েছিল, আমাদের সকল দাবিদাওয়া পূরণ করে দেবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমাদের একটা দাবি-দাওয়াও পূরণ করেনি।’
শ্রমিকদের অভিযোগের জবাবে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার সদস্য হাম জালাল জানান, ‘নৌযান শ্রমিকদের মূল দাবিগুলো মেনে নিয়ে লঞ্চ মালিকপক্ষ ২০১৬ সালে নৌযান শ্রমিকদের সাথে পাঁচ বছরের একটি চুক্তি করেছিল। সে চুক্তি অনুযায়ী তাদের ধর্মঘটে যাওয়া অযৌক্তিক। তবে ওই সময় ১৫টি দাবির মধ্যে শুধু শ্রমিকদের বেতন স্কেল ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছিল। বাকি ১৪টি দাবি এখনও পূরণ করা হয়নি।’
এদিকে শ্রম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আখতার হোসেন জানান, ‘আগামী বুধবারের সভায় নৌ পরিবহন খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র এবং সার্ভিস বুক দেওয়ার বিষয়ে মনিটরিংয়ের জন্য নৌ পরিবহন অধিদপ্তর তাদের বার্ষিক সার্ভে চেক লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর সাথে শ্রমিকদের খাদ্য ভাতা দেওয়ার বিষয়েও বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। যতদ্রুত সম্ভব আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে আগামী মার্চের মধ্যে আমরা সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিব।’
এতকিছুর পরেও ধর্মঘটে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে শ্রমিক নেতা শাহ আলম জানান, ‘শ্রমিকরা বারবার আশ্বাসে বিশ্বাসী নয়, বাস্তবায়ন দেখতে চায়।’
আনন্দবাজার/শাহী