ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রায়োগিক গবেষণাতে জোর দিন

প্রায়োগিক গবেষণাতে জোর দিন

মৌলিক গবেষণার পাশাপাশি প্রায়োগিক গবেষণাতেও জোর দিয়ে দেশের অব্যবহৃত সম্পদকে গবেষণার মাধ্যমে মানুষের কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, গবেষণার সাথে সাথে এই গবেষণালব্ধ জ্ঞান আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তার ওপর আমরা জোর দিচ্ছি। মৌলিক গবেষণার পাশাপাশি প্রয়োগিক গবেষণার ওপরও জোর দিতে হবে। এ বিষয়ে যারা গবেষক তারা নিশ্চয়ই এ বিষয়ে কাজ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নবনির্মিত ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র ভাষণে এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশিয় সম্পদ যা আছে, অনেক অমূল্য সম্পদ রয়ে গেছে যা আমরা এখনও ব্যবহার করতে পারিনি বা ধরা ছোঁয়ার বাইরে, সেগুলোও আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। এর ওপর গবেষণা করে সেগুলোও যাতে দেশের মানুষের কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।

সরকার প্রধান বলেন, স্বাস্থ্য বা খাদ্য উৎপাদন বা ইঞ্জিনিয়ারিং বা অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রেই গবেষণা প্রয়োজন। আসলে গবেষণা ছাড়া উৎকর্ষ সাধন হয় না। আর টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জন করতে গেলে আমাদের গবেষণা একান্তভাবে দরকার। সে জন্য সবাইকে গবেষণার দিকে একটু নজর দেয়া দরকার। আর সারাবিশে^ প্রযুক্তি ব্যবহারের যে প্রভাব বেড়েছে সেই প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আমাদেরকেও গবেষণায় সবসময় নজর দিতে হবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মুহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে নবনির্মিত ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স’এর ওপর একটি ভিডিও চিত্র ও প্রদর্শিত হয়।

বিজ্ঞান ও উন্নত প্রযুক্তির এ যুগে যে সব দেশ বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এগিয়ে যাচ্ছে, তারাই অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত উন্নতি করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্বাস্থ্য খাতের গবেষণায় পিছিয়ে থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময়ই বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তথ্য আদান-প্রদান ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে বহির্বিশে^র সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ স্থাপনে তাঁর সরকারের সময় অর্থাৎ ১৯৭৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ইন্টারন্যাশনাল টেলি-কমিউনিকেশন ইউনিয়নের সদস্য হয় বাংলাদেশ এবং ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় স্যাটেলাইট আর্থ-স্টেশনের উদ্বোধন করেন তিনি। তাঁর এ সব পদক্ষেপ আমাদের জন্য পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে তিনি দেখতে পান দেশে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী যেমন কমেছে তেমনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান শিক্ষার আগ্রহও কমে গেছে। তখন তিনি সারাদেশে ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে এই খাতের উন্নয়নে নতুন নীতিমালা গ্রহণ করে। সফটওয়্যার, ডাটা-এন্ট্রি, ডাটা-প্রসেসিংয়ের উন্নয়নে আইটি-ভিলেজ এবং হাইটেক-পার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়। শুল্কমুক্ত কম্পিউটার, কম্পিউটার যন্ত্রাংশ এবং সফ্টওয়্যার আমদানির অনুমোদন দেয় এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু সে সময় প্রায় ১০ হাজার স্কুলে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রদানে তাঁর সরকারের উদ্যোগকেও পরবর্তী বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে নস্যাৎ করে। আন্তর্জাতিক আদালতে ক্রয় চুক্তি ভঙ্গের দায় দেশের অর্থের ক্ষতিপূরণ ও গুনতে হয় তখন।

তিনি বলেন, টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকায়, হাতে সময় পাবার ফলে তাঁর সরকারের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে এখন ডিজিটাল ডিভাইস তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ই-গভর্ন্যান্স প্রতিষ্ঠা এবং আইসিটি শিল্পের বিকাশে গত ১৩ বছর ধরে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন আমরা করছি।

এ সব কাজে তাঁর ছেলে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সব ধরনের পরামর্শ এবং সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের মানুষের কল্যাণে, দেশের মানুষের শিক্ষায় সে (জয়) অবৈতনিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন