নতুন বছরের শুরুতে আরেক দফা বাড়ানো হবে বিদ্যুতের দাম। দাম বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এছাড়া কিছু বিতরণ কোম্পানিও গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য বিইআরসির কাছে প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
বিইআরসির সদস্য মো: আবদুল আজিজ খান বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টি একেবারেই প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। গণশুনানি শেষ হওয়ার পর বিইআরসি সিদ্ধান্ত নেবে মূল্য সমন্বয় করা হবে কি, হবে না।
এর আগে স্বল্প সময়ের জন্য কুইক রেন্টালের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। পর্যায়ক্রমে এসব ব্যয়বহুল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ারও কথা ছিল। কয়লাভিত্তিক সাশ্রয়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিদ্যুৎ খাত দীর্ঘমেয়াদি ভর্তুকির কবলে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভর্তুকি সমন্বয় করা হবে জনগণের ঘাড়ে বাড়তি মূল্য চাপিয়ে।
বিইআরসি সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা মূল্যহার পরিবর্তনের জন্য কমিশনে আবেদন জমা দিয়েছে পিডিবি, পিজিসিবি ও সকল বিতরণ কোম্পানি। আবেদন পাওয়ার পর কমিশন গণশুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে। সবার আগে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য পরিবর্তনের আবেদন করে পিডিবি।
আবেদনে পিডিবি লিখেছে, ২০২০ সালে বিদ্যুৎ বিক্রি করে আয় হতে পারে ৩৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু ওই সময় প্রয়োজন হবে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। ফলে বাকি আট হাজার ৬০৮ কোটি টাকা পূরণের জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে। এ জন্য মূল্য সমন্বয় করতে কমিশনের কাছে অনুরোধ জানায় তারা।
পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হলে খুচরা পর্যায়েও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রয়োজন হবে উল্লেখ করে বিইআরসির কাছে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও অনুরোধ জানিয়েছে পিডিবি।
এদিকে পিডিবির পাশাপাশি গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়াতে বিইআরসির কাছে প্রস্তাব করেছে পাঁচ বিতরণ কোম্পানি ডেসকো, ডিপিডিসি, নেসকো, আরইবি ও ওজোপাডিকো। পিজিসিবিও সঞ্চালন চার্জ সমন্বয়ের প্রস্তাব দিয়েছে।
বিইআরসি সূত্র জানিয়েছে, বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের আবেদনে কত মূল্য বাড়ানো হবে এমন কিছু উল্লেখ করেনি। তবে বিভিন্ন পরিচালন-ব্যয় বৃদ্ধি বিবেচনায় ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যহার বাড়ালে যে হারে পাইকারি মূল্যহার বাড়বে, সেভাবে কোম্পানিগুলোর বিদ্যুতের খুচরা মূল্য বাড়ানোর বিষয়টি কমিশনের বিবেচনার অনুরোধ জানায়।
বিইআরসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত পাইকারি মূল্যহার পরিবর্তনের ওপর এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)-এর প্রস্তাবিত সঞ্চালন মূল্যহার পরিবর্তন নিয়ে গণশুনানি হবে। এরপর ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর জন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবিত দামের ওপর শুনানি।
সর্বশেষ গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল ২০১৭ সালে। তখন ইউনিটপ্রতি বাড়ানো হয়েছিল ৩৫ পয়সা। তারও আগে ২০১৫ সালে পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য ১৮.১২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস