ফারাক্কার কারণে পদ্মা নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। বর্ষার সময়ে নিজ রূপে ফিরে আসলেও তা স্থায়ীত্ব থাকে না বেশি দিন। বেরিয়ে পড়ে শুষ্ক বুক। সেই পদ্মার বুকে জেগে উঠা চর। আর তাতেই চলে হালকৃষি। কৃষকরা তৈরি করেছে বোরো ধানের বীজতলা। জেগে উঠা পদ্মার চর ভরে গেছে ধানের বীজ তলায়।
আবাদী জমিতে বীজতলা তৈরি করতে খরচ বেশি হয়। এছাড়াও বীজতলা তৈরি জমির সংকটও দেখা দেয়। কিন্তু পদ্মা নদীর বুকে জেগে উঠা চরে বীজতলা তৈরি করতে খরচকম ও বীজ ভালো হয়। তাই কৃষকরা পদ্মার বুকে জেগে উঠা চরে তৈরি করেছে বীজতলা। পদ্মা যেন তার বুকে সবুজের বিছানা পেতে রেখেছে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫০ হেক্টর। এখন পর্যন্ত ৬৮০ হেক্টর বীজতলা তৈরি হয়েছে। এখনো কৃষকরা বীজতলা তৈরি করে চলেছে। গত বছর বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২৫ হেক্টোর। কৃষি অফিস বলছে এবার বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিস আরো জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে গোদাগাড়ী উপজেলায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর। গত বছর এ মৌসুমে বোরোধান চাষ হয়েছিল ১৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর। কৃষকরা ধানের দাম ভালো পাওয়ায় চলতি মৌসুমে ধান চাষ গত মৌসুমের তুলনায় বেশি হবে।
পদ্মার বুকে জেগে উঠা চরে বীজতলা তৈরি করা উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আবাদী জমিতে চাষ, পানি ও সার দিয়ে ধানের বীজতলা তৈরি করতে হয়। এতে খরচ হয়। কিন্ত পদ্মার চরে বীজতলা তৈরি করতে চাষ, পানি ও সার দিতে হয় না। তাতে খরচ কম হয়। এমনকি আবাদী জমির চাইতে পদ্মার চরে ধানের বীজ ভালো হয়।
নদীর পাড়ের মানুষেরা জানায়, কমবেশি বোরো ধান চাষাবাদ সবাই করে। অনেক পরিবারের বীজতলা তৈরির জায়গা থাকে না। নদীর বুকে চর উঠলে বীজতলা তৈরির জায়গা সংকট থাকে না। নদীর বুকে বীজতলা গুলোরদৃশ্য নজর কাড়ছে সবার। বিকাল হলে দুরদুরান্ত থেকে মানুষ পদ্মার চর বেড়াতে এসে বীজতলার সামনে দাঁড়িয়ে ছবি ও সেলফি তুলছে। উপভোগ করছে মনরোম দৃশ্য।