শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মন্দা কেটে ব্যাংকখাতে সুবাতাস

  • ব্যবসা সম্প্রসারণ-শিল্পস্থাপন বাড়ছে
  • ঋণের জন্য উদ্যোক্তারা ছুটছেন ব্যাংকে
  • বাড়তে শুরু করেছে ভোক্তা ঋণও
  • ঋণ চাহিদা বাড়ায় বাড়বে আমানতের সুদের হার

করোনা মহামারির প্রকোপ কমে আসার সুফল মিলছে ব্যাংকখাতে। দীর্ঘদিন পর বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ ফিরেছে স্বাভাবিক ধারা। করোনার কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণে যে মন্দা ছিল, সেটা অনেকটা কেটে গিয়ে সুবাতাস এসেছে। গেল কয়েক মাস ধরেই অর্থনীতির চাকা সচল হয়েছে। এতে বাড়তি গতি দিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে আমদানি-রফতানি। অর্থনীতির সব সূচকও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। অর্থনীতির এই ইতিবাচক ধারায় উদ্যোক্তাদের অনেকে তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণ ও নতুন শিল্প স্থাপনের জন্য ব্যাংকের কাছে ছুটছেন। ঋণের জন্য আবেদন করছেন।

ব্যাংক সূত্রমতে, ঋণের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাড়তে শুরু করেছে সুদের হার। যাতে আমানতকারীদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গেল আগস্টের চেয়ে সেপ্টেম্বরে মেয়াদি আমানতে সুদ বাড়িয়েছে ব্যাংকগুলো। একইভাবে সেপ্টেম্বরের চেয়ে অক্টোবরে সুদ হার বেড়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ঋণের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমানতের সুদের হারও বাড়তে থাকবে।

তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্টে আমানতের গড় সুদহার ছিল সর্বনিম্ন ৪ দশমিক ০৫ শতাংশ। পরের মাস সেপ্টেম্বরে ব্যাংকগুলোর আমানতের গড় সুদহার কিছুটা বেড়ে ৪ দশমিক ০৮ শতাংশে উন্নীত হয়। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, আগের নেওয়া ঋণ নবায়ন করছেন অনেকেই। অনেকেই আবার নতুন প্রকল্পে ঋণের আবেদন করেছেন। আর ব্যাংকগুলোও আগের চেয়ে বেশি ঋণ দিচ্ছে। তবে ঋণের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে আমদানি ব্যয়।

আরও পড়ুনঃ  বেড়েছে চাল-তেল-ডালের দাম 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী গেল অক্টোবরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছরের অক্টোবরে ঋণের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮.৬১ শতাংশ। অক্টোবরের শেষে বেসরকারি খাতে ঋণের স্থিতি বেড়ে হয়েছে ১২ লাখ ১৯ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে যা ছিল ১২ লাখ ১০ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। আগস্টে ছিল ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, নতুন নতুন প্রকল্প ছাড়াও স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোক্তারা তাদের কার্যক্রম চালু করেছেন। ব্যাংক-ঋণের জন্য তারা আবেদন করতে শুরু করেছেন। আবার ইতোমধ্যে ভোক্তা ঋণও বাড়তে শুরু করেছে। করোনার সময়ে বাড়ি-গাড়ি কেনা ও ব্যক্তিগত ঋণ যেভাবে কমে এসেছিল, সেটাও বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে মরিয়া হয়ে তহবিল খুঁজছেন। তাদের চাহিদার কারণে অচিরেই ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনায় চাপ তৈরি হবে। তাই আগামী দিনগুলোতে ঋণের প্রবৃদ্ধি তীব্রভাবে বাড়বে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন