ঢাকা | সোমবার
৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খেজুরের রস সংগ্রহে গাছে গাছে গাছিরা

খেজুরের রস সংগ্রহে গাছে গাছে গাছিরা

শীতকে কেন্দ্র করে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন নীলফামারীর চিলাহাটি উপজেলার গ্রামাঞ্চলের গাছিরা। গ্রামে পথের পাশে, ডোবা কিংবা পুকুর পাড়ে খেজুর গাছের পুরনো ডালপালা কেটে পরিষ্কারের কাজ করছেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শীতের তীব্রতা দেখা না দিলেও এরই মধ্যে অনেক গাছি খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। গ্রামীণ জীবনে শীত এ অঞ্চলের গাছিদের কাছে বিভিন্ন মাত্রায় রূপ নিয়ে আসে। নানা স্বপ্ন আর প্রত্যাশায় তাদের অনেকটা সময় কেটে যায় খেজুর গাছের সঙ্গে। সারাদিন এক গাছ থেকে অন্য গাছ এভাবেই তাদের দিন কেটে যায়।

গাছির জীবন সংগ্রামে বহু কষ্টের মাঝে অনেক প্রাপ্তিই মিটে যায় গ্রামবাংলার এ জনপ্রিয় বৃক্ষ খেজুর রস আহরণের সঙ্গে। গাছিদের কাছে এ সময়টা হয় অনেক আনন্দের। গাছ কাটার জন্য গাছের মাথার এক দিকের ডাল কেটে পরিষ্কার করা হয়। আর কাটা অংশের ঠিক মাঝ বরাবর নিচে দুটি ভাঁজ কাটা হয়। সে ভাঁজ থেকে কয়েক ইঞ্চি নিচে একটি সরু পথ বের করা হয়। এ সরু পথের নিচে বাঁশের তৈরি নালা বসানো হয়। নালা বেয়ে চুয়ে চুয়ে পাত্রে রস পড়ে। সাধারণত দুপুরে গাছে ভাঁড় বেঁধে রাখা হয়, সারারাত রস পাত্রে পড়তে থাকে। এ সময়টাতে শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন ধরনের পাখিরা গাছে ভিড় করে রস খাওয়ার জন্য।

গাছ কাটার পর দুই দিন রস পাওয়া যায়। প্রথম দিনের রস পাটালি গুড় তৈরি হয়, আর দ্বিতীয় দিনের রসে ঝোলা গুড় তৈরি হয়। রসের জন্য খেজুর গাছ একবার কাটার পর পাঁচ-ছয় দিন পর কাটা হয়। গাছের কাটা অংশ শুকানোর জন্য এ সময় দেওয়া প্রয়োজন। খেজুর গাছকাটা অংশ শুকানোর সুবিধার জন্যই সাধারণত পূর্ব ও পশ্চিম দিকে গাছ কাটা হয়। যাতে সূর্যের আলো সরাসরি কাটা অংশে পড়ে। ভোরের হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় গাছ থেকে রসের পাত্র নামিয়ে হিমশীতল খেজুর রস খাওয়ার স্বাদটাই মধুর।

সংবাদটি শেয়ার করুন