ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাম্পার ফলন হওয়ার পরও চাল নিয়ে ভোগান্তি

পেঁয়াজের ভোগান্তির পর এবার নতুন ভোগান্তির নাম চাল। সপ্তাহ না পেরোতেই খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫-৬ টাকা। চলতি মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার পরও দাম বৃদ্ধি পাওয়ায়, সিন্ডিকেট করে চালের মূল্য বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার নির্ধারিত ২৬ টাকা কেজি দরে মণ প্রতি ধানের দাম আসে ১ হাজার ৪০ টাকা। সেই হিসাব অনুযায়ী চালের দাম থাকার কথা ৩৯ টাকা। লাভসহ খুচরা বাজারে চালের সর্বোচ্চ মূল্য হওয়ার কথা ৪২ টাকা। কিন্তু এই হিসাব মানছেন না চাল ব্যবসায়ীরা।

চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের পর বাম্পার ফলন হয়েছে আমন ধানেরও। এবার সরকারিভাবে প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। বর্তমানে আমন ধান সংগ্রহ চলছে যা চলবে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, চাল-গম মিলে সরকারিভাবে মজুদ আছে ১৪ লাখ ৫৯ হাজার টন, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। চাল রয়েছে ১১লাখ ১২ হাজার ৬৭৪ টন। গতবছর দেশে মোট ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে। যেখানে বাৎসরিক চাহিদা ২ কোটি ৮৪ লাখ ১৬ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন।

এরপরও রহস্যজনক ভাবে দাম বৃদ্ধি নিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা দোষ দিচ্ছেন একে অপরকে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহ ঘুরতেই রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে চালের মূল্য বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা। ৪৪ থেকে ৪৫ টাকার মিনিকেট চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৭ থেকে ৫০ টাকায়। ৪৭ থেকে ৫০ টাকার নাজিরশাইল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়।

বেড়েছে মোটা চালের দামও। ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আটাশ চাল বেড়ে হয়েছে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা। ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা দরে বিক্রি হওয়া স্বর্ণা চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকায়। এদিকে পাইকারিতে প্রতি বস্তা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ২২৫০ থেকে ২৩০০ টাকায়। আটাশ চাল ১৭৫০ থেকে ১৮০০ টাকা এবং নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০ থেকে ২৭০০ টাকায়।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চালের দাম বৃদ্ধি না করতে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বুধবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে কঠোর বার্তা দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। ব্যবসায়ীরা নির্দেশনা না মানায় চালের মূল্য বেড়ে চলেছে।

খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, গতবারের চেয়ে এবার যেহেতু ধানের দাম কম ছিল সেহেতু চালের দাম এবার কম হতে হবে। কৃষক দাম পাবে না অথচ মধ্যস্বত্বভোগীরা সুবিধা নেবেন তা হবে না। তারা সরকারি দামে ধান কেনেনি তাহলে কম দাম দিয়ে কিনেও কেন চালের দাম বাড়বে। আর যেহেতু পর্যাপ্ত মজুদ আছে তাই চালের দাম কোনভাবেই বাড়ানো যাবে না।

এছাড়া চালের বাজার মনিটরিং করতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের রুখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনো ব্যবসায়ী চালের বাড়তি দাম নিলে বাজার মনিটরিং করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে। প্রয়োজনে খাদ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে জানানো হয়েছে।

 

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস

 

সংবাদটি শেয়ার করুন