ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুপ্রিম কোর্টে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কাজ শুরু

দীর্ঘ দেড় বছর পর আগামী বুধবার থেকে সুপ্রিম কোর্টে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১ ডিসেম্বর থেকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক উপস্থিতিতে আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগে বিচারিক কাজ পরিচালিত হবে।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন জ্যেষ্ঠ বিচারকদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

এর আগে গত বছরের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত ‘সাধারণ ছুটির’ সঙ্গে মিল রেখে দেশের সব আদালতেও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ফলে কার্যত বন্ধ হয়ে যায় দেশের বিচার ব্যবস্থা।

এরপর গত বছর ৯ মে সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্য বা যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দিতে পক্ষদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আদালতকে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা দিয়ে অধ্যাদেশ জারি হয়।

এর পরদিন সুপ্রিম কোর্ট ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘প্র্যাকটিস’ নির্দেশনা জারি করে। ১১ মে ২০১৯ দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথমবার ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

কভিড সংক্রমণ কমতে থাকলে প্রথমে কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক উপস্থিতিতে নিম্ন আদালতের কার্যক্রম চালু করা হয়। পরে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম চালু করা হয় হাই কোর্টের কয়েকটি বেঞ্চেও। পাশাপাশি চালু থাকে ভার্চুয়াল আদালতও।

তবে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেই চলে আসছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত, অর্থাৎ আপিল বিভাগ এবং চেম্বার আদালত।

চলতি বছর কভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিস্তার ঠেকাতে সরকার ৫ এপ্রিল থেকে সারাদেশে শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তারাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ওইদিন রাতেই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের কাছ থেকে সীমিত পরিসরে দেশের আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত আসে।

বিচার বিভাগ প্রধানের আদেশে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ সংক্রান্ত আলাদা তিনটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬ এপ্রিল থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে শুধু আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত, হাই কোর্টের চারটি বেঞ্চ চালু থাকবে। আর মুখ্য বিচারকি হাকিম বা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত সীমিত পরিসরে চালু থাকবে, তবে সব অধস্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

গত ১৩ এপ্রিল আরেক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় ভার্চুয়ালি সীমিত পরিসরে আপিল বিভাগের বিচারকাজ পরিচালনার কথা। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচরাপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ১৮ জুলাই থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা-বেলা সোয়া ১টা বিচারকাজ পরিচালনা করবে।

এরপর সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকাজ এভাবেই চলে আসছিল। তবে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন গত সপ্তাহে আভাস দেন, ডিসেম্বর থেকেই শারীরিক উপস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।

আনন্দবাজার/ টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন