বাংলাদেশের পুরুষ ক্রিকেট দল দেশের মাটিতে যখন পাকিস্তানের কাছে সিরিজ হেরেছেন। ঠিক তখন পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব শুরু করল বাংলাদেশের মেয়ে ক্রিকেট দল। বাংলার মেয়েদের এ জয় নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে নজির হয়ে থাকবে।
রবিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম বাছাই পর্বের খেলায় হারারের ওল্ড হারারিয়ান্সে ৩ উইকেটে এক রুদ্ধশ্বাস জয় ছিনিয়ে নিল বাংলাদেশের মেয়েরা। ২০২ রানের জয়ের লক্ষ্যে ২ বল বাকি থাকতেই জিতে গেলেন বাংলাদেশের মেয়েরা ক্রিকেট দল।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের মেয়েদের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ রান তাড়া করে জয়। পাকিস্তানের বিপক্ষেই ২০১৯ সালে ২১০ রান তাড়া করে জিতেছিল দলটি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০২ রানে টার্গেটে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১০ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওপেনার মুর্শিদা খাতুন (৯)। ফলে রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের।শুরুর এই ধাক্কা সামলে দলকে জয়ের লক্ষয়ে এগিয়ে নেন আর এক ওপেনার শারমিন আক্তার।
ফারজানা হক কে সঙ্গে নিয়ে শারমিন আক্তারের ৭০ রানের এই জুটিতে শক্ত ভিত পায় বাংলাদেশ। নাশরা সান্ধুর বলে ৪ চারে ৩১ রান করা শারমিন এলবিডব্লিউ হলে ভাঙে দূর্দম এই প্রতিরোধ। শুরুতে বাংলাদেশ দলের ভেঙ্গে পড়া রানের গতি থেকে ধারুণ সূচনা এনে দেওয়ায় সামগ্রিক দলে জয়ের ছন্দ ফিরে পায ফলে ক্রিকেট প্রেমীরা দাবী করেন।
এদিকে ওপেনার শারমিন আক্তার সুপ্তার দুর্দান্ত ব্যাটিং পারফর্মেন্সে দারুণ উচ্ছ্বসিত তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু ও সহপাঠীরা। জানা যায়, শারমিন আক্তার সুপ্তা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ ব্যাচের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি জাবিতে ২০১৩-১৪ইং শিক্ষা বর্ষে সরকার ও রাজনীতি বিভাগে ভর্তি হন।২০১৭-১৮ ইং সেশনে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
শারমিন আক্তার সুপ্তার দূর্দান্ত পারফরম্যান্সে তার উচ্ছ্বিত সহপাঠী জাবির ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী বাপ্পী নবী বলেন,”যেকোনো অর্জনের পেছনে একটা বড় সংগ্রামের ইতিহাস থাকে। নারী ক্রিকেটারের দলে সুপ্তার পারফর্মেন্স সেই সংগ্রামের ফল। বন্ধু হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে সুপ্তাকে যতটুকু জানি, তার মধ্যে লড়ে যাওয়ার প্রবল গতিটা ওর আছে। আর এই গতি ওর লক্ষে পৌঁছাবে। আর সেই প্রাপ্তি যেমন ব্যক্তিগত অর্জন, তেমনি তা দেশের জন্যই বড় অর্জন। সুপ্তার জন্য শুভ কামনা থাকবে প্রাণ থেকে।”
জাবির ৪৩ ব্যাচের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী লুৎফুল আল মাহদি বলেন,”দীর্ঘদিন অফ ফর্মে থাকার পর বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ারে শারমিন আক্তার সুপ্তার ব্যাটের হাসিতে বাংলাদেশ সবগুলো ম্যাচ জয়লাভ করবে এবং তা আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত চলমান থাকবে এই প্রত্যাশা করি।”
উল্লেখ্য, যে কোনো টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর শুরুটা ভালো হলে দলের আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে যায় । সেই কাজটি দারুণভাবে সেরে ফেলেছে বাংলাদেশ নারী দল। শুরুতে রানের তাড়ায় ভেঙ্গে পড়া দলকে ওপেনার শারমিন আক্তার সুপ্তার দারুন লিড পুনরায় চাঙ্গা করে তোলে যা দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌছে দেয়। এই জয় পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরুর পর সামনে এগিয়ে যাওয়ার টনিক হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন ক্রিকেট বৌদ্ধরা।
আনন্দবাজার/এম.আর