ঢাকা | বৃহস্পতিবার
২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুর মেডিকেলের চিকিৎসকরা প্রণোদনা পেলেও বঞ্চিত নার্সরা

রংপুর মেডিকেলের চিকিৎসকরা প্রণোদনা পেলেও বঞ্চিত নার্সরা

করোনা মহামারিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্বপালন করলেও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৭৬০ জন নার্স প্রণোদনার কোনও টাকা পাননি। অন্যদিকে দায়িত্বপালন করতে গিয়ে চার কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া ৭৬ জন নার্স-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হলেও তারা ক্ষতিপূরণের কোনও টাকা পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে হাসপাতালের ইন্টার্নসহ ৪৭২ জন চিকিৎসকের প্রায় সবাই করোনার প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলাম।

এদিকে প্রণোদনার টাকা না পাওয়ার ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালকের উদাসীনতা এবং দায়িত্বহীন আচরণকে দায়ী করেছেন হাসপাতালের নার্সেস অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি গোফরান আহাম্মেদ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনাকালে দায়িত্বপালন করতে গিয়ে ৭৬ জন নার্স ও কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে চার জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
নার্সরা অভিযোগ করেন, তারা নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে করোনায় আক্রান্ত এবং করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন।

সরকার অনেক আগেই হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের করোনাকালে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছিল। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনাও আসে। তবে দীর্ঘ ৯ মাসেও নার্স ও কর্মীরা প্রণোদনার কোনও টাকা পাননি।

এ নিয়ে বেশ কয়েকবার হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে, বিক্ষোভ করেও কাজ হয়নি। উনি বার বার আশ্বাস দিয়েও প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে কোনও পদক্ষেপ নেননি। তালিকা তৈরির অজুহাতে শুধু সময় ক্ষেপণ করেছেন।

নার্সেস অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি গোফরান আহাম্মেদ অভিযোগ করেন, সরকার করোনাকালে স্বাস্থ্য সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের প্রণোদনার নির্দেশনা দিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী দেশের সব হাসপাতালে করোনাকালে সেবাদানকারী নার্স ও কর্মচারীদের তালিকা তৈরি করে অধিদফতরে পাঠানোর আদেশ দেয়।

তবে হাসপাতালের পরিচালক নানা অজুহাতে তালিকা চূড়ান্ত করার নামে সময় ক্ষেপণ করছেন। এতে আমরা প্রণোদনার অর্থ পাচ্ছি না। তিনি আরও বলেন, আমরা অনেক সহ্য করেছি আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রণোদনার অর্থ না পেলে কঠোর আন্দোলনে যাবো।

এদিকে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান বলেন, হাসপাতালে ৭৬ জন নার্স ও কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন। এর মধ্যে চার জন মারা গেছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, যে চার জন মারা গেছেন আর যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের কেউ ক্ষতিপূরণ বা প্রণোদনার কোনও টাকা পায়নি।এটা চরম অমানবিক বিষয়, এ বিষয়ে বার বার পরিচালককে বলেও কোনও কাজ হচ্ছে না।

সার্বিক বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তালিকা যাচাই-বাছাই শেষ হওয়ার পথে। শিগগিরই তালিকা অধিদফতরে পাঠানোর পর নির্দেশনা পেলে অর্থ প্রদান করা হবে। কতদিন সময় লাগবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন আশা করি খুবই কম সময়ে হয়ে যাবে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন