যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সঠিক পথেই এগোচ্ছে ওয়াল স্ট্রিটে সাম্প্রতিক চাঙ্গা ভাবে এমনটাই মনে হতে পারে। তবে চলতি বছরের শেষ তিন মাসে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি স্থবির হয়ে পড়তে পারে। শুক্রবার ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের (ফেড) দুটি আঞ্চলিক শাখার প্রতিবেদনে এ রকম নেতিবাচক ছবিই ফুটে উঠেছে। খবর সিএনএন বিজনেস।
চতুর্থ প্রান্তিকে নিউইয়র্ক ফেডের জিডিপি পূর্বাভাস শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ এর আগে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। অক্টোবর জুড়ে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উৎপাদন হ্রাসসহ সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর কারণে এ রকম ‘নেতিবাচক পূর্বাভাস’ দিতে হয়েছে বলে জানায় নিউইয়র্ক ফেড।
আটলান্টা ফেডের জিডিপি পূর্বাভাস আরো খারাপ। শুক্রবার চতুর্থ প্রান্তিকের জন্য তাদের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশের। মাত্র এক সপ্তাহ আগে যেখানে ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল।
গাড়ি ও গ্যাসোলিন বাদে রিটেইল বিক্রি সংকোচন এবং ভোক্তা ব্যয় হ্রাসের ফলে পূর্বাভাস কমাতে হয়েছে বলে জানায় আটলান্টা ফেড। শুক্রবার প্রকাশিত উপাত্তে দেখা গেছে, অক্টোবরে ভোক্তা ব্যয় মাত্র শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ বেড়েছে।
এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত অর্থনৈতিক উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে এ পূর্বাভাস দিয়েছে ফেডের দুটি আঞ্চলিক শাখা। তবে নতুন উপাত্তের ভিত্তিতে পূর্বাভাসে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে বছর শেষে অর্থনীতি মারাত্মক সংকটাপন্ন বলেই প্রতীয়মান হতে পারে। জেনারেল মোটরসের ধর্মঘট বন্ধের ফলে নভেম্বর ও ডিসেম্বরে অর্থনীতি কিছুটা চাঙ্গা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
তৃতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৯০ শতাংশ। অথচ নতুন বছর শুরু হয়েছিল ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে। যদিও ভোক্তা ব্যয় কিছুটা চাঙ্গা রয়েছে, তবে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে সংকোচন চলছে এবং টানা দুই প্রান্তিক ধরে ব্যবসায় ব্যয় সংকুচিত হয়েছে। এর পেছনে ভূমিকা রাখছে চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ এবং বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি। তবে বিনিয়োগকারীরা এখনো বেশ আশাবাদী।
অবশ্য বিভিন্ন কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীরা অতটা আশাবাদি নন। সিসকোর প্রযুক্তিপণ্য সরবরাহ হ্রাসের পেছনে আজকের বৈশ্বিক অনিশ্চয়তাকে দায়ী করেছেন কোম্পানিটির সিইও চাক রবিনস। এক সংবাদ সন্মেলনে তিনি বিশ্লেষকদের বলেন, আপনি যদি বিশ্ব ঘটনাপ্রবাহ অনুসরণ করেন, তাহলে দেখবেন হংকংয়ে কী ঘটছে, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিরোধ কোন জায়গায় আছে, ওয়াশিংটনে কী চলছে। তার সঙ্গে আপনার সামনে রয়েছে ব্রেক্সিট এবং লাতিন আমেরিকায় অনিশ্চয়তা। বৈশ্বিক অর্থনীতি কোন দিকে এগোচ্ছে, সে বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে বলে মনে করেন চাক রবিনস। সূত্র:বণিক বার্তা
আনন্দবাজার/ইউএসএস