চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ‘প্রথম পর্যায়’ স্বাক্ষরের দ্বার প্রান্তে পৌঁছার কথা জানিয়েছেন মার্কিন জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের পরিচালক ল্যারি কুডল। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কাউন্সিলের এক অনুষ্ঠানে বেইজিংয়ের সঙ্গে বেশ গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্ব অর্থনীতির শীর্ষ দুই দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তির সই নিয়ে টেলিফোনে সফল আলোচনার কথা জানালেও সম্ভাব্য চুক্তির দিনক্ষণ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি এ কর্মকর্তা। খবর রয়টার্স, এএফপি।
হোয়াইট হাউজের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, ধীরে ধীরে আমরা প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তির দ্বার প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছি। আমাদের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে, যে রকম আলোচনা এর আগে হয়নি।
বাণিজ্যযুদ্ধের জেরে এরই মধ্যে চলতি বছরের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এছাড়া উভয় দেশের ঘোষিত শুল্কারোপ সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হলে আগামী বছর নাগাদ বৈশ্বিক অর্থনীতি ৭০ হাজার কোটি ডলার হ্রাস পাবে বলেও হুঁশিয়ার করেছে সংস্থাটি।
টালমাটাল এ অচলাবস্থায় কুডলের বক্তব্যে আশার আলো দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। বুধবারের বক্তব্যে তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে সবে আমার আলোচনা হয়েছে। তারা বেইজিংয়ের সঙ্গে সীমিত পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বেশ আশাবাদী। কুডল বলেন, প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের সময়সূচি এখনো আমরা নির্ধারণ করিনি। তবে আমাদের প্রতিনিধিদের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে।
এদিকে চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গাও ফেং বৃহস্পতিবার বলেন, বাণিজ্য চুক্তির প্রথম পর্যায় নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আমাদের ‘বিস্তারিত’ আলোচনা হয়েছে। চলমান দীর্ঘ বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন হঠকারী মন্তব্য সত্ত্বেও আরোপিত শুল্কারোপ প্রত্যাহার নিয়ে নিজেদের মধ্যে আশাজাগানিয়া আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ফেং বলেন, আমরা ওয়াশিংটনের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে ইচ্ছুক। প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতেও আমরা প্রস্তুত। এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা যদি প্রথম পর্যায়ের চুক্তি করতে পারি, তাহলে অন্য শুল্কগুলো প্রত্যাহারও যে কতটা জরুরি, তার একটা রূপরেখাও প্রথম পর্যায়ের চুক্তিতেই হাজির করা হবে। আমরা দুই পক্ষই এসব বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, আগামী ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে আরো কিছু চীনা পণ্যে ১৬ হাজার কোটি ডলার শুল্কারোপের পরিকল্পা রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের। গত মাসেই নতুন এ শুল্কারোপ ঘোষণার কথা থাকলে তা করা থেকে বিরত থাকেন ট্রাম্প। চলমান সীমিত বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় ওয়াশিংটন তা করা থেকে বিরত থেকেছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে সম্ভাব্য সীমিত বা প্রাথমিক পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের বর্ধিত হারে কৃষিজাত পণ্য ক্রয় ও মেধাস্বত্ব অধিকার সুরক্ষার বিষয়টিরও গ্যারান্টি চাইবে ওয়াশিংটন কর্তৃপক্ষ।
আনন্দবাজার/ইউএসএস