পাইকগাছায় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ প্লাবিত হয়ে বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে; ক্ষতি হয়েছে মৎস্য ঘের ও কাঁচা ঘরবাড়ি ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ও পুর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির চাপে উপজেলায় পাঁচ স্থান ভেঙ্গে ও উপছে পড়া পানিতে বিস্তৃর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ ওয়াপদার বেড়িবাঁধ উপছে পানি হুহু করে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ঘুর্ণিঝড় ইয়াস, পুর্ণিমা ও চন্দ্র গ্রহণের প্রভাবে নদ-নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ উপছে পড়ছে। রাতের জোয়ার নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
বুধবার (২৬ মে) দুপুরে উপজেলার আগড়ঘাটা বাজার সংলগ্ন পাল পাড়ার কাছে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ, রাড়ুলি ইউপি’র রাড়ুলী জেলে পল্লীর নিকটবর্তী বেড়িবাঁধ, গদাইপুরের বোয়ালিয়া ব্রীজ নিকটবর্তী বেড়ীবাঁধ, লতায় শিবসা নদীর বেড়িবাঁধ, দেলুটির চকরি বকরি এলাকায় শিবসা নদীর ওয়াপদার বাঁধে ভাংগন, সোলাদানা বাজার ও সোলাদানা আদর্শ গ্রাম, বেতবুনিয়া আদর্শ গ্রাম, গড়ইখালীর খুদখালী ভাংগন এলাকা দিয়ে হুহু করে গ্রামের ভেতর পানি ঢুকছে।পাউবো’র নিচু ও ঝুকিপুর্ন বেড়িবাধের উপর দিয়ে উপছে পড়া পানিতে ও পরে তা ভেঙ্গে গেলে লোকালয়ে পানি ঢুকলে বহু চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়ে চিংড়ি সহ নানা প্রজাতির সাদা মাছ ভেসেগেছে।
পাইকগাছা পৌরসদরের বাজার সম্পূর্ণ পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। বাজারের কাঁচামালের পট্টি, সোনা পট্টি, কাপড়ের পট্টি, কাঁকড়া পট্টি, মাছ বাজারসহ পৌরবাজারের সকল রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়।
পাইকগাছা পৌরসভাসহ ১০ টি ইউনিয়ের অধিকাংশ ওয়াপদার বাঁধ উপছে পড়া পানিতে তলিয়ে গেছে,চিংড়ী ও মৎস্য ঘের।নষ্ট হচ্ছে কাঁচা পাকা রাস্তা,বাড়ি ঘর ও ফসলের ক্ষেত। এদিকে গত দু’দিনে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান-মেম্বর, রাজনৈতিক-সমাজকর্মীরা সহ সরকারী ভাবে কর্মসৃজন প্রকল্পের লোকজন দিয়ে বিভিন্ন পোল্ডারের ঝুঁকিপূর্ন বাঁধ ও ভাঙন কবলিত স্থানগুলো মেরামত অব্যাহত রেখেছেন। পাউবো’র শাখা প্রকৌশলী মোঃ ফরিদ উদ্দীন জানান, ঘুর্নিঝড়ের প্রভাবে নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর ফলে বুধবার দুপুরের প্রবল জোয়ারে ২৩’পোল্ডারের সোলাদানা বাজার, পাটকেল পোতা,বরুইতলা,বেতবুনিয়া,নারিকেল তলা,পারশ্বেমারী, ,লস্করের করুলিয়া, ১০/১২ পোল্ডারের গড়ইখালী বাজার, খুতখালী, গাংরক্ষি পুর্ব হড্ডা, রাড়ুলীর জেলে পল্লী, লতার ধোলাই সহ দেলুটি, হরিঢালী সহ নানা স্থানের নিচু বেঁড়িবাধ উপছে বা পরে তা খাঁদ হয়ে কোথাও ভেঙ্গে গেলে পোল্ডারে লবন পানি প্রবেশ করে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন উপজেলার পাঁচটি স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে ও উপছে পড়া পানিতে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ছোট ছোট ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ মেরামত করা হয়েছে, বাকি ভাঙ্গা বাঁধমেরামতের কাজ চলছে। জোয়ারের আগে বাধের কাজ সমপন্ন করার চেষ্ঠা চলছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু,পিআইও ইমরুল কায়েস ও ওসি এজাজ শফী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার খোঁজ খবর নিতে দেখা গেছে। সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ জায়গা পরিদর্শন করেছেন এবং দলীয় লোকজনদের সাথে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ তদারকি ও বাঁধ মেরামতে স্থানীয় লোকজনদের উৎসাহ দিচ্ছেন।
উপকূল বাসীর যুগের পর যুগ টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি জানিয়ে আসছে। আর জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ঠদের আশ্বাস দিলেও টেকসই বেড়িবাঁধ পায়নি উপকুলবাসী। যার ফলে দুর্যোগে বার বার বিধ্বস্ত হচ্ছে বেড়িবাঁধ আর পানিতে তলিয়ে বিপন্ন হচ্ছে উপকুলবাসী।
আনন্দবাজার/শাহী/ইমদাদ