অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে গণপরিবহন চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। দাবি বাস্তবায়নে আগামী ২ মে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল এবং ৪ মে সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, বাংলদেশের প্রায় ৭৫ ভাগ যাত্রি ও ৬৫ ভাগ পণ্য সড়ক পথে সড়ক পরিবহন হয়ে থাকে। প্রতিদিন কয়েক কোটি যাত্রি ও পণ্য পরিবহনের কাজে ৫০ লাখ শ্রমিক দিনরাত কাজ করে থাকে। পরিবহন শ্রমিকরা গণমানুষের সংস্পর্শে থাকায় তারা যেমন সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে তেমনি যাত্রীরাও ঝুঁকিতে থাকেন। সেই বিবেচনায় গণপরিবহন বন্ধ রাখা যুক্তি সঙ্গত। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের জীবিকার নিশ্চয়তা বিধানের কথাও ভাবা দরকার। জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনে জীবিকারও প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা লকডাউন বিরোধিতা করছি না। কথা ছিল লকডাউনের সময় মানুষের চলাচল, শ্রম ঘন শিল্প, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোট-কাচারি সব বন্ধ থাকবে। সেই হিসেবে গণপরিবহণ বন্ধ থাকলে পরিবহন শ্রমিকের কোনও আপত্তি ছিল না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সবকিছু স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার শর্তে লকডাউন শিথিল করায় গার্মেন্টস, শপিংমল, কাঁচা বাজার, অফিস আদালত চলছে।’
ওসমান আলী বলেন, বর্তমান লকডাউনের গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা উপায়হীন হয়ে পরিবহন সেক্টরের জন্য সরকারের থোক বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি।
এ অবস্থায় তিন দফা দাবি তুলে ধরেন তিনি। দাবিগুলো হচ্ছে-
১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করতে হবে।
৩. সারাদেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকায় ওএমএস’এর চাল বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
এসব দাবি বাস্তবায়নে আগামী ২ মে (রবিবার) সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল এবং ৪ মে মঙ্গলবার সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণাও দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সহ সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু। শ্রমিক নেতা শহিদুল্লাহ ছদু, মফিজুল হক, হুমায়ুন কবির খান, আব্বাস উদ্দিন বেপু প্রমুখ।
আনন্দবাজার/শহক