ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শর্ত সাপেক্ষে দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ সুযোগ অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। কারণ গত বছরের ক্ষতি এখন পর্যন্ত কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তাই যদি নতুন করে সব বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব হবে না।
অর্থনীতিবিদদের তথ্যানুযায়ী, গতবছর লকডাউনের পর দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়েছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে সব অর্থনৈতিক কার্যক্রম আবারও চালু হলেও এখনও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেননি উদ্যোক্তারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, একটি দোকান ঘিরে কয়েকটি পরিবারের জীবিকা চলে। মালিক, কর্মচারী আবার তাঁদের মা-বাবা, স্ত্রী, সন্তান। তাই দোকান না খুলে আর কী-ই বা বিকল্প আছে। সুরক্ষিত থেকেই তাদের ব্যবসা করতে হবে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্যানুযায়ী, ছোট-বড় মিলিয়ে দেশে প্রায় ৬০ লাখ দোকান বা ক্ষুদ্র ব্যবসা রয়েছে। গত বছর সাধারণ ছুটিতে বন্ধ থাকার কারণে এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন এক হাজার ১০০ কোটি টাকা করে লোকসান হয়েছে। সেই লোকসান কাটিয়ে উঠতে এবারের পহেলা বৈশাখ ও ঈদ উৎসবের দিকেই তাকিয়ে আছেন তারা।
তারা জানান, এরই মধ্যে উৎসব ঘিরে দোকান মালিকরা এক হাজার কোটি টাকার মালপত্র তুলেছেন, মৌসুম চলে গেলে যা অবিক্রীত থেকে যাবে। তাই পুঁজি তুলে আনা তাদের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদসংলগ্ন খাবারের দোকান সিপির বিক্রেতা সৈয়দ ইফতেখার বলেন, লকডাউনে বেচাকেনা হয় না। গত বছরের লকডাউনে কেনাবেচা একদম বন্ধ ছিল। গত চার মাসে সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার পথে ছিলাম, এই লকডাউনে তো আবার ক্ষতির মুখে পড়ব।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, পহেলা বৈশাখ ও দুই ঈদকে কেন্দ্র করে কমপক্ষে ২০-২২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। গত বছর করোনার লকডাউনের কারণে লেনদেন তিন-চার হাজার কোটি টাকায় নেমে আসে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রণোদনা ও সব কার্যক্রম স্বাভাবিক করে দেওয়ায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠছিলেন ব্যবসায়ীরা। এবারের বিধি-নিষেধ দিলেও সব কার্যক্রম চলছে।
আনন্দবাজার/টি এস পি