ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিসরের ৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ক্ষতি

এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর অবশেষে সোমবার সুয়েজ খাল দিয়ে আংশিকভাবে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। খালের দুইপাশে অনেক জাহাজ আটকে থাকায় খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হতে আরো কয়েক দিন সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের সহায়ক আর্থিক ডাটা সংস্থা রিফিনিটিভের হিসাবে, এ সময়কালে সুয়েজ খাল দিয়ে কোনো জাহাজ পারাপার না হওয়ায় মিসর ৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার হারিয়েছে। পাশাপাশি পণ্য পরিবহনে বিলম্বের কারণে ইউরোপ ও এশিয়াজুড়ে উৎপাদন ও সরবরাহ শৃঙ্খলা ব্যাহতের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। খবর দ্য ন্যাশনাল।

২০ হাজার কনটেইনার বহনকারী দুই লাখ টনের বিশালাকার জাহাজ এভার গিভেন গত ২৩ মার্চ প্রবল বাতাসে সুয়েজ খালে আড়াআড়িভাবে আটকে যায়। এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর গত সোমবার জাহাজটি উদ্ধার করা সম্ভব হয় এবং সেদিনই আংশিকভাবে সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম এ নৌপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সুয়েজ খালের উভয় প্রান্তে চার শতাধিক জাহাজ আটকে পড়ে। ফলে এ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান মুডি’স জানিয়েছিল, সুয়েজ খাল বন্ধ থাকায় বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির মতে, এ কারণে ইউরোপের উৎপাদন ও গাড়ি খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে রয়েছে।

রিফিনিটিভের মেনা অয়েল ও শিপিং গবেষণা বিভাগের প্রধান রঞ্জিত রাজা বলেন, ছয়দিন ধরে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ ও মিসর ৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার রাজস্ব হারিয়েছে। তবে সোমবার জাহাজটি উদ্ধার করার খবরটি দুর্দান্ত ছিল। যদিও খালটি দিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হবে না। কয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সোমবার পর্যন্ত মোট ৩৬৯টি জাহাজ সুয়েজ খালের দুইপাশে আটকে ছিল। জাহাজগুলো সব মিলিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ টন পণ্য বহন করছিল। বুধবারের মধ্যে আরো ৮৫টি জাহাজ ওই জ্যামে যোগ দিতে যাত্রা করেছে। যদিও সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ একদিনে ১০০টি জাহাজের ট্রানজিট পরিচালনা করতে সক্ষম। এর মধ্যে আবার জাহাজের আকার ও জোয়ার-ভাটার মতো বিষয়গুলোর সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

রিফিনিটিভের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বাধা তেলবাজারে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে না। কারণ বিশ্বজুড়ে তেল বাণিজ্যের কেবল ১০ শতাংশ এ নৌপথ দিয়ে সম্পন্ন হয়। আর বর্তমানে তেলের চাহিদা দুর্বল এবং এশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোয় পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।

যদিও সুয়েজ খাল বন্ধ হওয়ার খবরে বেশকিছু পণ্যের সংকট তৈরি হয়েছে। জ্বালানি তেল, এলএনজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। পাশাপাশি বেড়ে গেছে পণ্য পরিবহন ব্যয়ও। রিফিনিটিভের তথ্য অনুযায়ী, নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের ব্যয় তিনদিনের সময়কালে ২৫ শতাংশ বেড়ে টনপ্রতি ২৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন