ঢাকা | রবিবার
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈয়দপুর হাসপাতালে ময়লা আবর্জনার পাশেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে রোগীরা

নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রয়োজনীয় বেডের অভাবে ফ্লোরে ময়লা আবর্জনার পাশেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে রোগীরা। এমন চিত্রই দেখা গেছে ১৮ মার্চ বুধবার বিকালে ১০০ শয্যা হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে। এখানে ডায়রিয়া রোগীসহ বিদ্যুৎস্পৃস্ট রোগীরা হাসপাতালে ফ্লোরে চিকিৎসাধীন প্রায় ৫ জন রোগীকে রাখা হয়েছে মেডিকেল আবর্জনাসহ ময়লাযুক্ত পানি ও দূর্গন্ধময় পরিত্যক্ত খাবার ভর্তি গামলার পাশে। তাছাড়া যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটে রয়েছে অসংখ্য ধুলাময়লা।

বুধবার বিকালে সরেজমিনে হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, দুপুরে শহরের পুরাতন বাবুপাড়া দারুল উলুম মোড় এলাকায় বহুতল ভবনে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃস্ট হয়ে গুরুত্বরভাবে আহত ২ নির্মাণ শ্রমিককে ফ্লোরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদের অবনতির আশংকা থাকা সত্বেও কেন বেডের ব্যবস্থা করা হয়নি। তারা হলেন সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত ডাঙ্গুয়াপাড়ার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে সাইদুল রহমান (১৬) ও নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় সংগলশি ইউনিয়নের বড়–য়া দহরপাড়ার মৃত শওকতের ছেলে একরামুল (৩৫)।

তাদের সাথে আসা পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেন যে, নার্সরা যেমন এমার্জেন্সি রোগীর ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার সাথে যে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তা করেনি। বরং অবহেলা করা সহ রোগীর সাথের লোকজনকে হয়রানী করেছেন। এমনকি চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীদের ইসিজি করার ক্ষেত্রেও বিলম্ব করেছে এবং এ ব্যাপারে বলতে গেলে তারা দূর্ব্যবহারও করে। এনিয়ে অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা পাওয়া যায়নি। তাদের ভাবখানা এমন ছিল যে, কোন ভাবে রোগীদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিতে পারলেই যেন তারা বাঁচে।

এছাড়া মুল রুমের পাশে করিডোরে ময়লার পাশেই একটি চাদর বিছিয়ে দেয়া বেডেই শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন শহরের হাতিখানা মাছুয়াপাড়ার মৃত জিতেনের ছেলে সুবাস (৩৫)। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দুপুর দেডটার দিকে শরীর হঠাৎ করে ফুলে যাওয়ার লক্ষণ দেখে হাসপাতালে আসলে চিকিৎসক ভর্তি হতে বলেন। ভর্তি হয়ে বেড না পেয়ে ফ্লোরেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু দায়িত্বরত নার্সরা যেন এক একজন শেঠ। তাদের আচরণে রোগীরা হতভম্ব। তারা কোন কথাই শুনতে চায়না। এমনকি আমার পাশে থাকা ময়লাভর্তি গামলা ও ফ্লোরের ধুলাময়লা সরাতে বলায় তারা আমার প্রতি কোন প্রকার ভ্রুক্ষেপ করছেন না। প্রয়োজনে ডাকলেও সারা দিচ্ছেন না।

একই অভিযোগ করেন ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগী শহরের গার্ডপাড়ার জাফর খানের ছেলে লিপন (২৬)। তিনি বলেন, হঠাৎ পাতলা পায়খানা দেখা দেয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। প্রয়োজনীয় বেড নেই তাই এই করিডোরেই রেখেছে। এখানে সর্বত্র ধুলা ময়লায় আচ্ছন্ন। পাশেই মেডিকেলের সকল আবর্জনা স্তুপ করে রাখা হয়েছে। জানিনা কখন এগুলো সরানো হবে। সরাতে বলেও কোন সাড়া পায়নি। এতে অপরিচ্ছন্ন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগীদের রাখা হয়েছে।

হাসপাতালে এ অবস্থার বর্ণনা দিয়ে মুঠোফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ ওমেদুল হাসান সম্রাট বলেন, হাসপাতালে দুই বেলায় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। কেন ময়লার স্তুপ পরিস্কার করা হয়নি বিষয়টি আমি দেখবো।

আনন্দবাজার/শাহী/মনন

সংবাদটি শেয়ার করুন