দেশে নতুন করে আবারও সম্প্রসারিত হচ্ছে করোনা ভাইরাস। এ কারণে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সর্বস্তরে মাস্ক পরার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নতুন ১১ টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
আজ সোমবার (১৫ মার্চ) এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় জানানো হয়, মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে বাড়ির বাইরে সর্বত্র মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।
এছাড়া মাস্ক পরার ক্ষেত্রে সরকারের ১১টি নির্দেশনা উল্লেখ করে তা প্রতিপালনের জন্য নাগরিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। ওই নির্দেশনায় সরকারের ১১টি নির্দেশনা হলো-
১। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট অফিসে আগত সেবাগ্রহীতারা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহার করবেন। সংশ্লিষ্ট অফিস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
২। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালসহ সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে আসা সেবাগ্রহীতারা আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করবেন। সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
৩। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির ও গির্জাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট পরিচালনা কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
৪। শপিংমল, বিপণিবিতান ও দোকানের ক্রেতা-বিক্রেতারা আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করবেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও মার্কেট ব্যবস্থাপনা কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
৫। হাট-বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক ব্যবহার করবেন। মাস্ক পরা ছাড়া ক্রেতা-বিক্রেতারা কোনো পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করবেন না। স্থানীয় প্রশাসন ও হাট-বাজার কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
৬। গণপরিবহনের (সড়ক, নৌ, রেল, আকাশপথ) চালক, চালকের সহকারী ও যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। গণপরিবহনে আরোহণের আগে যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মালিক সমিতি বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
৭। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ সব শিল্পকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও মালিকরা বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
৮। হকার, রিকশা ও ভ্যানচালকসহ সব পথচারীর মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করবেন।
৯। হোটেল ও রেস্টুরেন্টে কর্মরত ব্যক্তি এবং জনসমাবেশ চলাকালীন আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরিধান করবেন। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মালিক সমিতি নিশ্চিত করবেন।
১০। সব সামাজিক অনুষ্ঠানে আগত ব্যক্তিদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান নিশ্চিত করবেন।
১১। বাড়িতে করোনা উপসর্গসহ কোনো রোগী থাকলে পরিবারের সুস্থ সদস্যরা মাস্ক ব্যবহার করবেন।
এদিকে, গত ২৪ ডিসেম্বরের পর আজ সোমবার (১৫ মার্চ) সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ ৯.৪৮ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ৭ জানুয়ারির পর আজ একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও ১৫ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে।
আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৭৭৩ জনের শরীরে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট করোনা শনাক্ত দাঁড়াল ৫ লাখ ৫৯ হাজার ১৬৮ জন।
এদিন, নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ২৬ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮ হাজার ৫৭১ জনে। নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৪৩২ জন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ১৩ হাজার ১২৭ জন।
আনন্দবাজার/শাহী