ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অযত্নের কচুরিপানা রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে

খাল-বিলে অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকা জলজ উদ্ভিদ কচুরিপানা থেকে তৈরি পণ্য এখন রপ্তানি হচ্ছে দেশের বাইরে। আর এই কচুরিপানার ওপর ভর করে গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার অনেক পরিবার আর স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্রীরা এবার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে। ফেলনা উদ্ভিদ কচুরিপানা এখন অর্থকরী পণ্যে রূপান্তরিত হয়েছে। 

এইসব এলাকা ঘুরে দেখা যায় নদীভাঙনে সর্বহারা বাড়ির কর্তারা মাছের আশায় ভেসে বেড়ান ব্রহ্মপুত্র নদীতে। তখন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার নারী ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিশুরা ব্যস্ত কচুরিপানা দিয়ে ফুলের টব তৈরিতে।

এখানকার একজন উদ্যোক্তা সুবাস চন্দ্র। তিনি জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করা এসব ফুলের টব। টব তৈরি করে সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার দুই শতাধিক নারী এখন সংসারের উপার্জনক্ষম মানুষ। বিদেশি ক্রেতাদের আগ্রহে মাস খানেক আগে ফুলছড়ির মদনের পাড়ায় পানা থেকে ফুলের টব তৈরির এই কাজ শুরু করেন তিনি।

সুভাষ চন্দ্র আরও জানান, প্রতি কেজি কচুরিপানা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। তিনি প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার কচুরিপানা কিনে নারীদের সরবরাহ করেন। সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার চারটি কেন্দ্রে আড়াইশ’ নারী ও কিশোরী এসব কচুরিপানার শুকনো ডাটা থেকে তাদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি করেন ফুলের টব।

সদরের গিদারী ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহরিয়ার হোসেন বলেন, দুই দিন আগেও শুধু স্বামীর আয়ের ওপর নির্ভরশীল নারীরা যখন অকেজো কচুরিপানা দিয়ে নিজেরাই আত্মনির্ভর তখন তার মতো অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।

হঠাৎপাড়ার স্কুলছাত্রী সোমা জানান, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ। অবসর সময়টা নষ্ট না করে তিনি কচুরিপানার টব তৈরি করেন। একটা টব তৈরি করে ২০ টাকা আয় করেন। সারাদিনে ১০টা টব তৈরি করলে ২০০ টাকা আয় করা সম্ভব। মাস শেষে অনায়াসে ছয় হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। এখানে কাজ করতে আসা গৃহিণীরা জানান, গৃহস্থালির কাজকর্ম সেরে তিনি কচুরিপানা দিয়ে ফুলের টব বানান। এই আয় থেকে নিজের হাত খরচ ছাড়াও সংসারের টুকটাক খরচ করতে পারছেন।

জানা জায়, ঢাকার ইকো বাংলা জুট লিমিটেডের নামের একটি প্রতিষ্ঠান এসব পন্য রফতানি করে থাকে। তারা পানা থেকে তৈরি করা এসব ফুলের টব পাঠায় ডেনমার্ক, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন