ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের পদক্ষেপের প্রশংসা জাতিসংঘ মহাসচিবের

করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যগত ও আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ গৃহীত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেনের সাথে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ প্রশংসা করেন তিনি।

মহাসচিব গুতেরেজ বলেন, কোনো ঝুঁকি নিরসণের বৈশ্বিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ সর্বদাই শীর্ষস্থানীয়, তাই কভিড অতিমারি মোকাবিলায় বাংলাদেশের এ ধরনের সাফল্য দেখে আমি মোটেও অবাক হইনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশেষ করে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তার সুদৃঢ় প্রতিশ্রুতির উচ্চকিত প্রশংসা দাবি রাখে।

আলোচনাকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিব উভয়েই সম্মত হন যে কভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক সম্পদ’ হিসেবে বিবেচিত করা উচিত।

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে তার প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন, আর তা হলো রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। সমস্যাটির সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে জাতিসংঘ সদা প্রস্তুত রয়েছে।

এসময় ভাসানচরে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহাসচিবকে অবহিত করেন এবং সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের মানবিক সহায়তার অনুরোধ জানান।

জলবায়ু কর্মসূচিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের যে সুদৃঢ় প্রতিশ্রুতি রয়েছে তার প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জলবায়ু-অর্থায়নকে সচল করতে মহাসচিবের আহ্বানকে স্বাগত জানান। ক্লাইমেট ভারনারেবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু সংক্রান্ত লক্ষ্য অর্জনে এবং এ বছর গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য কপ-২৬ সফল করতে জাতিসংঘের সাথে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে মর্মে উল্লেখ করেন তিনি।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা তার জীবনের যুদ্ধ বলে অভিহিত করে মহাসচিব বলেন, অভিযোজন কৌশল বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত জলবায়ু তহবিলের ৫০ ভাগ বরাদ্দ পেতে দাতাদের বোঝানোর চেষ্টা করবো। উপকূলবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক অভিযোজন কর্মসূচি এবং নদী ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গৃহীত পদক্ষেপসমূহকে অসাধারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটেগরি থেকে উত্তরিত হতে যাচ্ছে মর্মে সন্তুষ্টির কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে এক্ষেত্রে উন্নয়ন অংশীদার ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ উত্তরণ পরবর্তী সময়েও যেন নতুন সহায়তা ব্যবস্থার আওতায় সদ্য উত্তরিত দেশগুলোকে বিবেচনা করে সেজন্য তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে মহাসচিবের দপ্তরের পূর্ণ সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুগপৎভাবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম এবং মহাসচিবের পুনঃনির্বাচন ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর উৎসবে অংশগ্রহণ করতে মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভার্চুয়াল এ বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা উপস্থিত ছিলেন।

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস

সংবাদটি শেয়ার করুন