সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) সাবেক রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনের গত বছরের জুনে দেয়া জরিমানা সংক্রান্ত এক মৌখিক আদেশের বাস্তবায়ন না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিষয়টি সাংবাদিকদের অবগত করেন।
জানা যায়, গত বছরের ১ জুলাই অনলাইনে শুরু হওয়া সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার এক সপ্তাহ পূর্বে ২৪ জুন সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধের আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রশাসন। বকেয়া পরিশোধ না করলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না মর্মে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এর দুদিন পর ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সাথে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, ছাত্র সংসদ, সাংবাদিক সমিতি, ছাত্র পরিষদ সহ অন্যান্যরা আলোচনায় বসে।
তখন রেজিস্ট্রার জানান, বকেয়ার ৫০% পরিশোধ করে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে এবং ১০ জুলাই তারিখের মধ্যে যারা বকেয়া পরিশোধ করবে, তাদের জরিমানা দিতে হবে না। একইসাথে যারা তখন ইতোমধ্যে ৫ হাজার জরিমানা সহ বকেয়া পরিশোধ করেছেন, তাদের জরিমানার টাকা পরবর্তী সেমিস্টারে যুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি। রেজিস্ট্রারের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে তখন একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
কিন্তু ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও তৎকালীন রেজিস্ট্রারের এই ঘোষণার বাস্তবায়ন হয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের। তারা জানান, আমরা ২৭ জুন তারিখের ঐ ঘোষণার আগেই জরিমানা সহ টাকা পরিশোধ করেছি, কিন্তু জরিমানার ৫ হাজার টাকা পরের সেমিস্টারে যুক্ত করা হয়নি। এর ফলে তাদের ঐ ৫ হাজার টাকা এখনো বাকি দেখানো হচ্ছে। ফলে তারা পরীক্ষার ফল দেখা এবং পরবর্তী সেমিস্টারের ক্লাসে অংশগ্রহণ করা নিয়ে বিপাকে আছেন বলে জানান।
ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থী ইহসানুল কবির জরিমানা সহ বকেয়া পরিশোধ করেন গত বছরের ২২ জুন। একই অনুষদের মো. সাগর সরকার রকি রেজিস্ট্রারের ঘোষণার পূর্বেই জরিমানার ৫ হাজার সহ বকেয়া পরিশোধ করেন। ঘোষণা অনুযায়ী, তাদের উভয়েরই জরিমানার টাকা পরের সেমিস্টারে যুক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু সর্বশেষ ২৭ জানুয়ারি প্রকাশিত বকেয়া তালিকায় তাদের উভয়েরই ৫ হাজার টাকা বাকি দেখানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে হিসাব ও অর্থ বিভাগের পরিচালক মো. আব্দুল কাদের জানান, লিখিত না পেলে মৌখিক আদেশে তো আমরা কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারিনা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তৎকালীন সময়ে রেজিস্ট্রারের মুখের কথাতেই অনেক কিছু বাস্তবায়ন হতো। লিখিত নোটিশ তিনি কমই দিতেন। সিদ্ধান্ত হওয়ার পর যদি তিনি লিখিত নোটিশ না দেন, এর দায়ভার কে নিবে? এটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের কেন ভোগান্তিতে পড়তে হবে?
তৎকালীন রেজিস্ট্রারের এই আদেশের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত হবে, জানতে পরপর দুইদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি। প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ছাত্রীর সাথে অশ্লীল ফোনালাপ ফাঁসের পর ১২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনকে অব্যাহতি দেয় ট্রাস্টি বোর্ড।
আনন্দবাজার/শাহী/আশিকুর