ঢাকা | সোমবার
৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে শীতের সিজনাল পিঠা বিক্রিতে ধুম

গাজীপুরে শীতের সিজনাল পিঠা বিক্রিতে ধুম

দেশের সকল জায়গায় প্রচন্ড ভাবে জেঁকে বসেছে শীত। তবে এই শীতে বাড়তি আনন্দ নিতে এবং মোখরোচক চাহিদা পূরণে বিভিন্ন ধরনের পিঠায় অভ্যস্ত বাঙ্গালী। আর সেই স্বাদ নিতে বাসা-বাড়িতে তৈরী করা হয় বাহারী রকমের পিঠা, ঠিক তেমনি বর্তমানে শীত আসলেই জেলা শহরের ফুটপাতসহ বিভিন্ন এলাকার অলিতে গলিতে বসে পিঠা বিক্রির দোকান। আর তারই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন এলাকার মতো গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়ও শীতের শুরু থেকেই জমে উঠেছে পিঠা বিক্রির ধুম।

সরেজমিনে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, শিববাড়ি মোড়, মুক্ত মোড়, রেল গেইট সংলগ্ন কলাপট্টি, রাজবাড়ি মাঠের প্রধান ফটক সংলগ্ন, হাড়িনাল বাজার এবং কাপাসিয়া উপজেলার ধান বাজার,খেয়াঘাট মোড়, কাপাসিয়া বাসস্টেন্ড,তরগাঁও মেডিকেল মোড়, চালা বাজার চৌরাস্তা, কামারগাঁও নামা বাজার, বারিষাব বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় যে, মেইন রোডের ফুটপাত ও এলাকার বিভিন্ন অলিতে-গলিতে বসেছে পিঠা বিক্রির দোকান। এসব দোকানে বেশি পাওয়া যায় চিতই পিঠা ও ভাঁপা পিঠা। তবে কোন কোন দোকানে আবার তেলের পিঠাও পাওয়া যায়।

পিঠা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা এই প্রতিবেদককে জানান, পিঠা তারা সব সময়ই বিক্রি করেন না। এটা তাদের সিজনাল ব্যবসা। তবে কোন কোন লোক সারা বছরই পিঠা বিক্রি করে থাকেন। প্রত্যেকদিন দুপুরের পর থেকেই পিঠা বিক্রি শুরু হলেও সন্ধ্যার পরই বিক্রির বেশি ধুম পড়ে যায়। সন্ধ্যার পর থেকে যেহেতু শীত বাড়তে থাকে তখনই পিঠার দোকান গুলোতে চিতই ও ভাঁপা পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সের শ্রেনী পেশার মানুষ। পিঠা খাওয়ার জন্য তৈরী করে রাখা হয়েছে সরিষা ভর্তা, শুটকি ভর্তা, ধনিয়া পাতার ভর্তাসহ বিভিন্ন প্রকারের সু-স্বাদু ভর্তা। অনেকে আবার চিতই পিঠার সাথে ডিম দিয়ে খেতেও ভালোবাসেন। সেটাও বিক্রি হয় বেশ।

শীতের পিঠা বিক্রেতারা অধিকাংশই নিম্মবিত্ত পরিবারের পুরুষ, মহিলা ও তাদের ছেলে মেয়েরা। তবে গাজীপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পূর্বের মতো আর পিঠা বিক্রি হয়না। এর প্রধান কারণ বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি।

পিঠা তৈরী ও বিক্রির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিক্রেতারা জানান, সারাদিন অন্য কাজগুলো শেষ করে বাড়তি একটা আয়ের জন্য আমরা বিকেলে বেছে নিয়েছি এই পিঠা তৈরীর ব্যবসা। প্রতিটা পিঠা ৫ টাকা থেকে শুরু করে ১০টাকা পিছ দামেও বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ কেজি পরিমাণ চালের গুরো দিয়ে পিঠা তৈরী করে তা বিক্রি করা হয়।

এদিকে জেলা সদরের রেলগেইট এলাকায় পিঠা খেতে আসা মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, এখানে অনেককেই পিঠা খেতে দেখা যায়। বিভিন্ন ধরণের ব্যস্ততার কারণে বাড়িতে পিঠা খাওয়ার পর্যাপ্ত সময় হয়ে উঠেনা তাই এখানে এসে পিঠা খেয়ে একটু স্বাদ নেওয়ার চেষ্টা মাত্র। পিঠা খাওয়া শেষ করে অনেকেই দেখা গেছে আবার বাড়িতে নিয়ে যান ছেলে-মেয়ের জন্য।

কাপাসিয়া উপজেলার কামারগাঁও নামা বাজার এলাকার পিঠা বিক্রেতা দিলীপের মা জানান, শীত আসতেই দোকানে কাজের চাপ বেড়ে যায়। পিঠা তৈরী করাসহ সকল ধরণের কাজ তাকেই করতে হয়। ক্রেতাদের পিঠার চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত সময় পাড় করতে হয় তাকে। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে পিঠা বানানো ও বিক্রি।

তবে এই শীতে করোনা মহামারির কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেচা-বিক্রি তুলনামূলক ভাবে অনেক কম।

আনন্দবাজার/শাহী/সবুজ

সংবাদটি শেয়ার করুন