শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈয়দপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ৬২ বছরে মেয়র পদে প্রথম নারী প্রার্থী

সৈয়দপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ৬২ বছরে মেয়র পদে প্রথম নারী প্রার্থী

নীলফামারীর প্রথম শ্রেনীর সৈয়দপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৬২ বছর পর এই প্রথম মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করতে যাচ্ছেন একজন নারী প্রার্থী। তাও আবার আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে। তিনি হলেন, সাবেক মেয়র ও সদ্য প্রয়াত উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আখতার হোসেন বাদলের স্ত্রী রাফিকা আকতার জাহান বেবী।

আগামী ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকার মাঝি হিসেবে মেয়র পদে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ন হচ্ছেন। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তার প্রার্থীতা নিশ্চিত হওয়ায় তাকে নিয়ে সৈয়দপুর জুড়ে শুর” হয়েছে নতুন করে ভোটের হিসাব নিকাশ। বিশেষ করে আওয়ামী পরিবারে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে প্রার্থীর পক্ষে। সকল দ্বিধাদ্বন্দ ভুলে সকলেই এক কাতারে সামিল হতে প্রস্তুত। জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করে উপহার হিসেবে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র পদটি দিতে চান তারা।

সৈয়দপুর পৌরসভার দীর্ঘ পরিক্রমায় স্বাধীনতার পূর্বে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত প্রশাসক সহ স্বাধীনতা উত্তর নির্বাচিত এ পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ৯ টি পরিষদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে একাধিক প্রার্থীসহ অরাজনৈতিক ব্যক্তিরাও মেয়র পদে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু কোন নির্বাচনেই ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদ ছাড়া কোন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বদিতা করেনি। এবারই প্রথম মেয়র পদে নারী প্রার্থী হওয়ায় অন্যরকম এক আবহ তৈরী হয়েছে তাকে নিয়ে।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, রংপুর বিভাগীয় ও নীলফামারী জেলা সভাপতি জননেতা আখতার হোসেন বাদলের হঠাৎ মৃত্যুতে তার স্ত্রী রাফিকা আকতার জাহান বেবীকে প্রার্থী করতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং সে অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানানোর প্রেক্ষিতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে মনোনয়ন প্রদান করা হয়েছে। এর ফলে প্রার্থী নিয়ে দলের মাঝে যে টানাপোড়েন ছিল তা যেমন বিদুরিত হয়েছে তেমন মেয়র পদে বিজয় নিয়ে আশাবাদের সৃষ্টি হয়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে।

আরও পড়ুনঃ  করোনায় নারী উদ্যোক্তা 'রূপকথা'র ইল্লিন

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে কথা হয় রাফিকা আকতার জাহান বেবীর সাথে। তিনি জানান, আমার স্বামী ছিলেন সৈয়দপুর তথা নীলফামারী জেলার জন মানুষের নেতা। তিনি মটর শ্রমিক অঙ্গনে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখায় কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া তিনি ছিলেন সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে সৈয়দপুরে নেতৃত্ব দিয়ে আওয়ামী রাজনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। তার নেতৃত্বেই বিএনপি’র ঘাটি হিসেবে পরিচিত সৈয়দপুর এখন আওয়ামীলীগের দূর্গে পরিনত হয়েছে। তিনি জাতীয় সকল আন্দোলন সংগ্রামে জননেত্রীর নির্দেশে স্থানীয় জনমানুষের ভাগ্য উন্নয়নে আজীবন চেষ্টা করে গেছেন। তার এ অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে সদ্য প্রয়াত আখতার হোসেন বাদলের যে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তার অসমাপ্ত উন্নয়ন চিন্তার আলোকে সৈয়দপুরকে একটি আধুনিক ও উন্নত শহরে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সুবিবেচনা করতঃ আমাকে প্রার্থীতা প্রদান করেছেন। তার সে বদান্যতার উত্তম প্রতিদান দিতে আমরা আওয়ামী পরিবার বদ্য পরিকর। তাইতো সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।

তিনি বলেন, যদিও ইতোপূর্বে আমি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলাম না। তথাপি আমার স্বামীর রাজনৈতিক দর্শণ ও কার্যক্রম সম্পর্কে সর্বদা অবগত ও সচেতন ছিলাম। তাই তার কর্মকান্ডের আলোকে আমার মাঝেও রাজনীতি বিষয়ে সম্যক ধারণা রয়েছে এবং সকলের সহযোগিতায় আগামীতে আরও সমৃদ্ধি ঘটবে। যতটুকু বিচক্ষণতা রয়েছে তার সাথে নেতৃবৃন্দের দিক নির্দেশনা আর সুপরামর্শের ভিত্তিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারবো বলেই আমি আশাবাদি। সে পথচলার প্রথম ধাপ হিসেবে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশির্বাদে আমি প্রার্থী হয়েছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সৈয়দপুরবাসী আমার স্বামীর প্রতি যেমন ভরসা করতেন তারই আলোকে আমাকেও তাদের ভালোবাসা ও ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন ইনশাল্লাহ।

আরও পড়ুনঃ  স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার 

নীলফামারী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নীলফামারী পৌরসভার দীর্ঘদিনের মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ জানান, বর্তমান সরকারের আমলে জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সে সূত্রে সৈয়দপুরেও উন্নয়ন হয়েছে এবং আগামীতেও আরও নানা কার্যক্রম সম্পাদনের পথে রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সৈয়দপুরের সচেতন জনগণ অবশ্যই সুবিবেচনা করবেন। আমি শতভাগ আশাবাদি যে, প্রধানমন্ত্রীর নিজের দেয়া প্রার্থীকে সৈয়দপুর আওয়ামীলীগ তথা সৈয়দপুরবাসী তাদের পৌরসভার নেতৃত্বে নির্বাচনের মাধ্যমে বসাবেন। এতে সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে এবং সৈয়দপুরে আরও ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।

আনন্দবাজার/শাহী/মনন

সংবাদটি শেয়ার করুন