চলছে হেমন্ত। হালকা কুয়াশায় যেন শীতের আগমনী বার্তা। এমন সময় ভাপা পিঠা কার না ভালো লাগে! সকল বয়সী মানুষের কাছেই বলতে গেলে ভাপা পিঠার কদর সমান। কিন্তু আধুনিকতার এ যুগে ঘরে ভাপা পিঠা তৈরির প্রচলন ক্রমান্বয়ে কমতে থাকলেও গ্রাম থেকে শহর কোন জায়গায় ভাপা পিঠার প্রচলন কমেনি। বরং ব্যস্ত জীবনের মানুষগুলো তাদের প্রিয় ভাপা পিঠার স্বাদ পেতে ভাপা পিঠা বিক্রির দোকানেই ভিড় জমান। এর ব্যতিক্রম ঘটেনা বাংলার কোন প্রান্তে।
চালের গুড়া, নারিকেল আর গুড়ের সমন্বয়ে তৈরি এ ভাপা পিঠা এক গ্রামীণ ঐতিহ্য। শীত মৌসুমে গ্রামীণ বধূরা রকমারি পিঠা তৈরি করেন। শীতের পিঠার মধ্যে ভাপা পিঠা একটি অন্যতম পিঠা। ভাপা পিঠা আবার হরেক রকম পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। কখনো মিষ্টি ভাপা, কখনো ঝাল ভাপা। খেজুর রস দিয়ে ভাপা পিঠা খেতে বড়ই সুস্বাদু ও মুগ্ধকর।ভাপা পিঠাসহ কয়েক ধরণের ভর্তা দিয়ে গরম গরম চিতই পিঠার কদর সব বয়সীদের মাঝেই দেখা যায়।
কিন্তু সময়ের সাথে মানুষ কর্মব্যস্ত হওয়ার কারণে ঘরে ভাপা পিঠা তৈরির প্রচলন ক্রমশই কমছে। তাই কদর বাড়ছে ভাপা পিঠা দোকানিদের।শীতের সকাল বলেন আর সন্ধ্যা বলেন সব সময়ই সমান ভিড় থাকে ভাপা পিঠার দোকানে।
শীত এলেই শহর ও গ্রামীণ হাটবাজারে নানা রকম পিঠা বিক্রি করা হয়। বিশেষ করে ভাপা পিঠা, তেলের পিঠা ও চিতল পিঠা।এসব পিঠার সমাদর সবখানেই সমানভাবে রয়েছে। শীত বাড়ার সাথে সাথে শহর ও গ্রামীণ হাট-বাজারে ফুটপাতে শীতের পিঠার ব্যবসা জমে উঠছে।
দিনাজপুরের স্থানীয় বাজার, গ্রাম ও শহরের ফুটপাতে পিঠা ব্যবসায়ীদের পিঠা বিক্রির হিড়িক পড়েছে। ভোর থেকে সকাল এবং বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শহর-গ্রামীণ বাজার ও বিভিন্ন জায়গায় চলে শীতের পিঠা বিক্রির ধুম। শহরের অলিগলিতে রাস্তার আশপাশে পিঠেপুলির ভ্রাম্যমাণ দোকানও বসে। এসব দোকানে কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্ক লোকেরা পিঠা তৈরি করে ক্রেতার কাছে বিক্রি করেন। এ পিঠা বিক্রি করে সংসার চালায় তারা।
দিনাজপুরের এক ভ্রাম্যমাণ পিঠা বিক্রেতা বলেন, প্রতি শীত মওসুমে পিঠা বিক্রি করি। এসময় তার প্রতিদিন প্রায় ৩-৪ হাজার টাকা বিক্রি হয়। শীতের শুরুতে একটু ক্রেতা কম হলেও শীত যত বাড়বে ততই ক্রেতাও বাড়বে বলে জানান তিনি।
শিশু-কিশোর-বয়োবৃদ্ধ সব বয়সীদেরকেই পিঠার দোকানে ভীড় করতে দেখা যায়। সকল বয়সের মানুষের এক সাথে পিঠা খাওয়া দেখে মনে হতে পারে কোন এক উৎসব চলছে।
আনন্দবাজার/শাহী/আজিজুর