করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমের প্রস্তুতির মধ্যেই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের প্রায় ২৬ হাজার মাঠকর্মী।
মাঠকর্মীরা বলছেন, আগেও একাধিকবার আশ্বাস পেয়েছেন। অথচ এরই মধ্যে তাদের সমপর্যায়ে অন্য সেক্টরের কর্মীদের একাধিক ধাপে পদোন্নতি দেওয়া হলেও তাদের পদোন্নতি হয়নি। স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবিগুলোর অন্যতম ক্রমানুসারে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের বেতন ১১, ১২, ১৩তম গ্রেডে নিতে হবে।
সরকারের দাবি, যৌক্তিক দাবি পূরণের চেষ্টা চলছে, আন্দোলনরত স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, এর আগেও একাধিকবার এমন আশ্বাস পেয়েছেন তারা। এই পরিস্থিতিতে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হওয়া দফায় দফায় বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। যার কারণে কর্ম ব্যাহত হওয়া ও মাঠপর্যায়ে নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম ঝুঁকির মুখে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এগুলো দ্রুত পূরণ সম্ভব না হলে আসন্ন করোনার টিকা দেওয়ার বিষয়টিতে বাধা হতে পারে বলে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের যৌক্তিক দাবিগুলো সরকারের উচ্চপর্যায়ের নজরেও রয়েছে, যা বিবেচনাধীন, কিন্তু এ জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়েও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে গ্রুপিং চলছে। একটি পক্ষ আমাদের ওয়াদা দিয়েছে তারা আন্দোলনে থাকছে না, অন্য পক্ষ এখনো কাজে যোগ দেয়নি। ফলে তারাও হয়তো করোনা মহামারির মধ্যে এমন বিধিবহির্ভূত আন্দোলনের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যেতে পারেন বলে হুঁশিয়ারি দেন ডা. নাসিমা। তিনি বলেন, যদিও আমরা চাই সকলে তারা বাস্তবতা উপলব্ধি করে নিজেরাই কাজে ফিরে যাক। নয়তো এই সময়ে নানা ধরনের ব্যাঘাত ঘটবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (জাতীয় টিকাদান কার্যক্রম) ডা. সামসুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি নিয়ে টেনশনে আছি। কেন যে বিষয়গুলো সুরাহা হচ্ছে না, সেটা বুঝতে পারছি না। আমি যতদূর জানি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের জায়গা থেকে আন্তরিকতার অভাব নেই।
তিনি আরো বলেন, প্রায় পাঁচ হাজার মাঠকর্মীর পদ শূন্য আছে। এগুলো পূরণ না হলে সামনে করোনার টিকাদান কার্যক্রমেও ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
গত ২০ নভেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মবিরতির ঘোষণা দেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রবিউল আলম খোকন। তবে এটি কার্যকর করা হয়েছে ২৬ নভেম্বর থেকে।
উল্লেখ্য, কর্মবিরতিতে ২৬ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী, পদ শূন্য ৫ হাজার; দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছে সরকার, তবে স্বাস্থ্যকর্মীরা এর আশু বাস্তবায়ন চান।
আনন্দবাজার/এহসান