শীতের সবজিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও, চাল ও তেলের দাম ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। দফায় দফায় নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় এ পণ্য দুটির দাম বেড়েই চলেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে টানা দুই সপ্তাহ ধরে চাল ও তেলের দামবৃদ্ধির বিষয়টি উঠে এসেছে। রাজধানীর খুচরা ব্যবসায়ীরাও দিয়েছেন একই তথ্য।
এদিকে, টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে পাইজাম ও লতা বা মাঝারি মানের চালের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। পাইজাম ও লতার দাম বেড়ে ঠেকেছে ৫৫ টাকায়। এর আগের সপ্তাহে এই দুই ধরনের চালের দাম ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে ৫৪ টাকায় ঠেকেছিল।
এছাড়া, আগের সপ্তাহে মোটা বা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চালের দামও বেড়েছে বলে জানিয়েছে টিসিবি। ‘গরিবের চাল’ হিসেবে আখ্যায়িত এই চালের দাম ১ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৮ টাকা।
খুচরা ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরণের চালের দাম কেজিতে অন্তত ২-৩ টাকা করে বাড়ন্ত। ৫২-৫৩ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের পাইজামের দাম বেড়ে ৫৫-৫৬ টাকা হয়েছে। নাজির ও মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৭-৬২ টাকায়, যা আগে ছিল ৫৫-৬০ টাকার মধ্যে।
রাজধানীর রামপুরার ব্যবসায়ী মামুন জানান, ‘কয়েকদিন ধরে চালের দাম বাড়তি। মোটা চাল একেবারে বাজারে নেই বললেই চলে। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম সম্প্রতি দুই দফায় বেড়েছে। মাঝারি মানের চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন চিকন চালের দামও বাড়ন্ত। এই দাম বৃদ্ধির প্রবণতা কতোদিন চলবে বলা মুশকিল।’
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জানে আলম ভূঁইয়া জানান, ‘বাজারে মোটা চাল একেবারে নেই। এক মাসের বেশি হয়ে গেছে আমরা মোটা চাল পাচ্ছি না। সম্ভবত মোটা চালের সঙ্কটের কারণেই মাঝারি ও চিকন চালের দাম বাড়ন্ত। গত দুই সপ্তাহে যেভাবে চালের দাম বেড়েছে, তাতে মনে হচ্ছে সামনে আরও দাম বাড়তে পারে।’
এদিকে, চালের পাশাপাশি ক্রেতাদের ভুগতে হচ্ছে তেলও।
টিসিবির তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা হয়েছে, যা আগে ছিল ৯৮ থেকে ১০০ টাকা। ৫ লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের দাম ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়ে ৫০০-৫৩০ টাকা হয়েছে। যা গেল সপ্তাহে ছিল ৪৯০-৫২৫ টাকা। বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে ১১০-১২০ টাকা হয়েছে।
দাম বৃদ্ধির এ তালিকায় রয়েছে খোলা ও সুপার পাম অয়েলও। টিসিবির তথ্যমতে, বাজারে খোলা পাম অয়েলের দাম ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে ৯১-৯২ টাকা হয়েছে। এক সপ্তাহে আগে খোলা পাম অয়েলের দাম ছিল ৮৬-৯১ টাকা। আর সুপার পাম অয়েলের দাম ২ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে ৯৪-৯৬ টাকা হয়েছে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯১-৯৪ টাকা।
এ বিষয়ে রাজধানীর মালিবাগ হাজীপাড়ার বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম জানান, ‘সবজির দামে এখন কিছুটা হলেও স্বস্তি দিলেও চাল ও তেলের দাম সেই স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে। আগে সবজি কিনতে পকেটের সব টাকা খরচ হয়ে যেত, এখন চাল ও তেল কিনতে গেলে পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের চাল ও তেলের বাজারে দ্রুত নজরদারি বাড়ানো উচিত বলে মনে করছি।’
আনন্দবাজার/শাহী