দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিবর্তন করা হবে অধিকাংশ পাঠ্যবই। সেই সাথে ৩য়শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষাই নেওয়া হবে না। এমনকি ১০ম শ্রেণির আগে কোনো পাবলিক পরীক্ষাও থাকবে না। তবে নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে বেশ চিন্তিত রয়েছেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা।
শিক্ষকরা জানান, তাদের জন্য মানসম্মত প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বেড়ে গেলে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাক্রমে বড় ধরণের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা এক বছরের পরিবর্তে ২ বছর করা হবে। দশম শ্রেণির আগে কোনো পাবলিক পরীক্ষা থাকবে না। নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা নামে কোনো বিভাগ থাকবে না। সেটি নির্ধারণ করা হবে উচ্চ মাধ্যমিকে।
এছাড়া, ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত বইয়ের ক্ষেত্রে ভাষা ও যোগাযোগ, সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব, জীবন ও জীবিকা, পরিবেশ ও জলবায়ু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিল্প সংস্কৃতি অন্তর্ভুক্ত হবে। দশম শ্রেণিতে গিয়ে হবে পাবলিক পরীক্ষা। শুধুমাত্র দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচীর ভিত্তিতে এসএসসি পরীক্ষা হবে।
মোট ৫ টি বিষয়ে পরীক্ষা হবে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুক্র এবং শনিবার ছুটি থাকবে। কিন্তু জাতীয় দিবসে খোলা থাকবে। পূর্বের সিলেবাসের অনেক বিষয় বাদ দেয়া হবে। সেই সাথে নতুন বই সংযোজন করা হবে।
এই বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলছে, করোনায় অনেকদিন স্কুল বন্ধ থাকার পর শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন পরিবর্তনে অনেকটাই অসুবিধা হবে তাদের। করোনার মধ্যেই যদি নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত করা হয় তাহলে আরও বেশি সমস্যা হবে। বইয়ের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম আছে সেটির সাথে আমরা পরিচিত। কিন্তু নতুন বইয়ের সাথে পরিচিত হতে আমাদের একটু সমস্যা হবে। অভিভাবকরা বলছেন পাঠ্যক্রমে ঘনঘন পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানো শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য একটা মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে।
তবে নতুন শিক্ষা পদ্ধতি আধুনিক ও যুগোপোযোগী মনে করছেন শিক্ষকরা। তারা বলেন, এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যায়ে সকল শিক্ষকের জন্য গুণগত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
আদমজি ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল এর সিনিয়র শিক্ষক মো. আবুল হাসান জানান, সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে এখানে একটি জীবনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রস্তাবনা রয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটির সাথে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পরিচিত করা বেশি জরুরি।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে