ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ২২টির মত ইটভাটা আছে। এসব ইটের ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এ যেন দেখার কেউ নেই, হাজার হাজার মণ কাঠ পাহাড়ের মত উঁচু করে রেখে একে একে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
এর মধ্যে ৪টি ইটভাটায় ড্রাম চিমনি আছে, বাকিগুলো ফিক্সড চিমনির। শৈলকূপায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পায়নি কোনো ইটভাটাই। এসব ভাটায় প্রতিদিন আনুমানিক দেড় হাজার মণ কাঠ পুড়বে বলে জানা গেছে।
সরোজমিন ঘুরে দেখা যায়, ইট ভাটার মৌসুম শুরু হওয়ায় কাঠ পোড়ানোর প্রতিযোগীতায় নেমেছে ভাটা মালিকরা। উপজেলার প্রতিটি ভাটায় প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়ে থাকে। এভাবে প্রতিদিন কাঠ পুড়তে থাকলে পরিবেশের উপর মারাত্বক প্রভাব পড়বে জেনেও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তা ব্যক্তিরা উদাসীন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রকাশ্যে কিভাবে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে তা নিয়ে জনমনে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ভাটা মালিক মান্নান বলেন, একটি ভাটায় জ্বালানি হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ ব্যবহার হয়ে থাকে। তার ভাটায় প্রতিদিন ২০০ মণ কাঠ লাগে। তবে কয়লা দিয়েও ইট পোড়ান বলে জানান তিনি।
হাটফাজিলপুর এলাকার এক ইটভাটার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তার ভাটায় প্রতিদিন ৩০০ মণ জ্বালানি কাঠ লাগে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, সব ভাটাতে কাঁচা ইট পোড়ানোর জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে হাজার হাজার মণ কাঠ।
ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক হারুন অর রশীদ জানান, ভাটায় কাঁচা ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জিকজার ভাটা ছাড়া সরকারিভাবে কোন ভাটার অনুমোদন দেওয়া হয় না। তিনি জানান, ২০১৪ সাল থেকে জিকজার ভাটা ছাড়া ড্রাম চিমনি ও ১২০ ফিট লম্বা ফিক্সড চিমনির ভাটা অবৈধ।
এব্যাপারে শৈলকুপার সহকারী ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ড) পার্থ প্রতিম শীল বলেন, এভাবে কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ বে-আইনী। হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞা না থাকলে অবশ্যই ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আনন্দবাজার/এম.কে/এম.এম