রেলওয়ে ডিজিটালাইজেশনের জন্য দরপত্র আহবানের পর এগিয়ে রয়েছে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোই। এ প্রকল্পে দেশি প্রতিষ্ঠানকে চুক্তিবদ্ধ করা গেলে প্রায় ১শ কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব!
ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরির লক্ষ্যে এবং বাস-ট্রেনের টিকেট পাওয়া নিয়ে গ্রাহকের ভোগান্তির ইতি টানতেই বাংলাদেশ সরকার ই-টিকেটিং এর বিষয়ে নজর দেয়। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এ পদক্ষেপ যুতসই বটে। সে ধারাবাহিকতায় রেলপথের টিকেট কাটার প্রক্রিয়াটিকে আরো সহজ এবং আধুনিক করে তোলার জন্য কাজ করছে সরকার।
বাংলাদেশ রেলওয়েকে আধুনিক করে তোলার এ প্রক্রিয়ায় সরকার কর্তৃক দরপত্র আহবান করা হয়, যাতে অংশগ্রহণ করে দেশী বিদেশি বেশ কিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। সব ধরণের বাছাই পর্ব শেষে উৎরে যেতে পারলেই মিলবে রেলপথের টিকেটিং সিস্টেম আধুনিকায়ন করা নিয়ে সরকারের সঙ্গে কাজের চুক্তিপত্র।
দরপত্রের ভিত্তিতে চুক্তিপত্র পেতে যাচ্ছে কারা তা নিয়ে যথেষ্ট জল্পনা কল্পনা রয়েছে। তবে দেশি বিদেশি নামী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চলমান এ প্রক্রিয়ায় এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘সহজ ডট কম’। সহজের দক্ষ কারিগরি দল, এ খাতে তাদের দক্ষতা ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে পিছে ফেলে সামনে এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বলেই ধারনা করা যায়। অন্যদিকে সহজের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদেরকে এ প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ করা গেলে এখান থেকে ১শ কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব বলেও জানানো হয়।
এখানে বলে রাখা ভালো, বাস, লঞ্চ, বিভিন্ন ইভেন্ট, সিনেমাসহ যেকোনো কিছুর টিকেট সংক্রান্ত বিষয়ে সেবা প্রদান করে আসছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানটি। সহজ ফুড, সহজ ট্রাকসহ রাইড শেয়ারিং সেবাও চালু রয়েছে তাদের। এছাড়া করোনাকালীন সময়ে করোনা ট্রেসার বিডি নামে একটি অ্যাপ সরকারের সাথে যূথবদ্ধ হয়ে কাজ করছে তারা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের থেকে জানানো হয়-বর্তমানে ব্যবহৃত সফটওয়্যারটির উন্নয়ন ও আপগ্রেড করার বিষয়টিতে জোর দিয়ে রেলওয়ের টিকেট ব্যবস্থার সম্পুর্ন ডিজিটালাইজেশনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে তারা কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে যাত্রীবাহী পরিষেবা উন্নত হবে এবং টিকেট ছাড়া ভ্রমণের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে বলে ধারনা করা যাচ্ছে।
রেলওয়ে টিকেট ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশনের জন্য পাঁচ বছরব্যাপী এ চুক্তির ক্ষেত্রে দেশি প্রতিষ্ঠানকে প্রাধান্য দেয়া হবে বলেই আশা করা যায়। এ বিষয়ে উর্ধতন রেলওয়ে কর্মকর্তা জানান, এ ধরণের প্রকল্প বাংলাদেশে আগেও হয়েছে তবে যেটা পরিলক্ষিত হয় তা হচ্ছে- বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ শেষ করতে পারে না, কখনোবা অসম্পূর্ণ থেকে যায় ফলে শেষ হতে দেরী হয়। শুধু তাই নয়, তারা স্থানীয় ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয় চাহিদা সঠিকভাবে বুঝতে পারে না। মোদ্দাকথা, এ ধরণের প্রকল্প সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়সারা কাজের উদাহরণ রয়েছে। ফলে দেশি প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করাই ভালো সমাধান।
আনন্দবাজার/শাহী