নারায়নঞ্জের রূপগঞ্জে কৃষকরা এখন বিলেতি ধনিয়া চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার উঁচু ও সমতল ভূমিতে উৎপাদিত হচ্ছে ‘বিলাতি ধনিয়া’নামে ধনেপাতা। শীতকালে জমিতে প্রতি বছর এ ধনেপাতার চাষ করে আসছে রূপগঞ্জের কৃষকেরা। রূপগঞ্জে উৎপাদিত এ বিলাতি ধনিয়ার চাহিদা সর্বত্র রয়েছে। তাই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ ধনেপাতা দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে।
রূপগঞ্জের কামশাইর, খামারপাড়া, উত্তরপাড়া, বড়ালু, ইছাখালী, বরুনা, মাঝিনাসহ বিভিন্ন এলাকার জমিতে বিলাতি ধনেপাতার চাষ করে আসছেন কৃষকরা। অল্প সময়ে ফলন আসে বলেই বিলাতি ধনেপাতার চাষ করে এদের অনেকেই স্বাবলম্বী। এ বছর ধনেপাতার উৎপাদন বেড়েছে। সেই সঙ্গে উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে। উপজেলার খামারপাড়া এলাকার চাষি মফিজুল ইসলাম বলেন, আমি আমার দুই কানি জমিতে বিলাতি ধণিয়া চাষ করেছি। এই চাষে সার ঔষধ দিতে হয়। তাই সব মিলিয়ে খরচ একটু বেশি পড়ে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার দ্বিগুণ ফলন হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতি কানি জমিতে দেড়-দুইশ কেজি ফলন হয়। এতে ৭০-৮০ হাজার টাকা খচর হয়। তবে তা বর্তমান বাজার দরে প্রতি কেজি ৭০-৭৫ টাকা করে বিক্রি করলে প্রায় দেড়-দুই লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তাই রূপগঞ্জের চাষিরা এ ধনেপাতা চাষের প্রতি বেশি আগ্রহী। এছাড়া আমাদের এই ধনেপাতা শুধু রূপগঞ্জ নয়, ঢাকা থেকেও অনেক পাইকাররা এসে নিয়ে যায়।
বরুনা এলাকার চাষি এছেক আলী বলেন, ফসলে বেশি করে সার, ঔষধ দিতে হয়। এগুলো না দিলে ফলন ভালো হয় না। এছাড়া অন্যান্য খরচও রয়েছে। তাই সব মিলিয়ে খরচ বেশি হয়। কিন্তু ফলন ভালো হওয়াতে দাম মোটামুটি পাচ্ছি। রূপগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে ধনেপাতা চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে সহজ শর্তে কৃষকদের কৃষি ঋণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার দাবি রূপগঞ্জের এ চাষিদের।
রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কায়ছুন রাফাত হাওলাদার বলেন, রূপগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের কাছে বিলাতি ধনিয়া চাষ বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা যদি গত পাঁচ বছরের রূপগঞ্জের কৃষি পরিসংখ্যান দেখি তাহলে বলতে পারবো আগে এ ধনেপাতা ১৯০-২০০ হেক্টর জমিতে চাষ হতো। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ২৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে।
আনন্দবাজার/শাহী/ফয়সাল