ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের আমন ধানের সোঁদা গন্ধে ভরে উঠছে আবহমান গ্রামীণ জনপদ। শুরু হয়েছে আমন ধান কাটার উৎসব। আমন ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছেন ঈশ্বরগঞ্জের কৃষকরা। হালকা কুয়াশার পর্দা সরে গিয়ে মিষ্টি রোদ এসে পড়তেই দেখা যায় দিগন্তজোড়া প্রান্তরের সোনালি ঢেউ। মৃদু বাতাসে পাকা ধানের শীষ দোলা মাঠের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। এর মাঝেই দেখা যায় কাচি হাতে ব্যস্ত কৃষকদের। মাঠের পাকা ধান কেটে তুলতে হবে গোলায়। এনিয়ে উপজেলার মাঠে মাঠে চলছে আমন ধান কাটার উৎসব।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ১৮হাজার ৯০হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে চাষ হয়েছে ১৯হাজার ১০০হেক্টর। ব্রি-ধান ৩৪, ৪৯, ৭১, ৫১, ৫২, ও বি আর ১১ সহ রঞ্জিত, বিশারি, ও স্থানীয় বিভিন্ন জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ জমিতে ব্রি-ধান ৪৯ ও ব্রি-ধান ৭১ চাষ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখা যায়, পুরোদমে চলছে ধান কাটার কাজ। কেউ কেউ কাঁধে করে ধানের আঁটি নিয়ে মাঠের মাঝখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে পরিপূর্ণ এক দৃশ্য—যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা।
মাইজবাগ ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এবার আবাহওয়া ভালো থাকায় ফসল ভালো হয়েছে। খরচ আর ধানের দাম মিলিয়ে এবার মোটামুটি লাভ হবে আশা করি। সরকারের কাছে আশাবাদী ধানের ন্যায্য মূল্য পাবো।
এদিকে, আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও ধানের ন্যায্যমূল্য পেতে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সরকারিভাবে ধান কেনার দাবি জানিয়েছেন এখানকার কৃষকরা।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা জানান, আদর্শ বীজতলা তৈরি, সঠিক বয়সের চারা রোপণ, সুষম সার প্রয়োগ এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বারের চেয়ে এবার ভালো ফলন হয়েছে। রোগ ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাধন কুমার গুহ মজুমদার জানান, কৃষকরা আগাম জাতের ধান চাষ করায়, ধান কেটে অন্য ফসল সরিষা, আলু চাষ শুরু করছে। কৃষকদের মাঝে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সার ও উন্নত ফলনশীল বীজ বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া কৃষকদেরকে সার্বিক নজরদারি ও পরামর্শসহ নানা ধরনের সহযোগিতাও করা হয়েছে
আনন্দবাজার/শাহী/তারেক