পেঁয়াজ নিয়ে তুঘলকি কারবার যেন থামছেই না। আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশ কম। দেশে যেসব পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে সেগুলোর আমদানিমূল্যও কম। কিন্তু ব্যবসায়ীদের কূট কৌশলের কারণে দেশের বাজারে এখনও পেয়াঁজের অযৌক্তিক মূল্য অব্যাহত রয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ঘোষণা ছাড়াই চোরাই পথে ভারত থেকে প্রতিদিনই পেঁয়াজ আসছে। কিন্তু দেশের বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। প্রায় এক মাস ধরে পেঁয়াজের দাম ঘোরাফেরা করছে ১০০ টাকার আশপাশে। কিন্তু আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে বাজারে এমন অযৌক্তিক মূল্য অব্যাহত রয়েছে।
আমদানি তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার কর্তৃক পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করা হলেও ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ২০ দিনে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে আট হাজার ৫৬৮ টন পেঁয়াজ। এ সময়ে মিয়ানমার থেকে ১২ হাজার ৮৪৯ টন, মিসর থেকে ৫৬২ টন এবং চীন থেকে ৫২ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। সব মিলিয়ে ২০ দিনে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ২২ হাজার টন। যদিও দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা, উৎপাদন এবং আমদানির সঠিক তথ্য সরকারের কোনো সংস্থার কাছেই নেই।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত কয়েক দিনে মিয়ানমার থেকে যে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে, সেগুলোর দাম পড়ছে প্রতি কেজি ৪২ টাকা। একই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। এর আগে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৭২ টাকা কেজি দরে। বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। মিসরের পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ২৫ টাকা কেজি দরে, বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় আমদানি মূল্যের সাথে বাজারমূল্যের ব্যবধানও বাড়ছে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্র রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত সরকার। গত ২১ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর এরই মধ্যে ২৬ দিন পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এ সময়ে বাংলাদেশ অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
আনন্দবাজার/ইউএসএস