চলতি বছর ঘূর্ণিঝড় ও কয়েক দফা বন্যাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, বাড়িঘর, স্কুল-কলেজ, নানা স্থাপনা, ফসলসহ ইত্যাদির। ফলে আম্ফান, বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে হওয়া ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার ৫ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা খরচে একটি প্রকল্প নিতে যাচ্ছে।
জানা গেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করার কথা রয়েছে। সেই সাথে স্থানীয় সরকার বিভাগ/স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এ বছরের অক্টোবর থেকে আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত চট্টগ্রাম,খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের ১৪টি জেলার ৬৯টি উপজেলা, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২৮টি জেলার ১৮২টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এছাড়া ভারীবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২২টি জেলার ১৩৯টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক এবং ব্রিজ-কালভার্ট পুনরায় নির্মাণের মাধ্যমে পল্লী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সংরক্ষণ, টেকসই সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় ও সময় সাশ্রয় করা, নানা পণ্যাদির বাজারজাত ব্যবস্থা সহজ করা, সড়ক অবকাঠামো মেরামত ও পুনর্বাসনের মাধ্যমে কৃষি/অকৃষি খাতে প্রত্যক্ষ/পরোক্ষভাবে গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখার জন্যই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
এসব উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে এ প্রকল্পের অধীনে ২ হাজার ৩৮৮ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার উপজেলা সড়ক পুনর্বাসন করা, ২ হাজার ২৭৪ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক পুনর্বাসন করা, ৪ হাজার ৬৩১ দশমিক ৮৫ মিটার (২৬৮টি) ব্রিজ পুনর্বাসন/পুনর্নিমাণ করা, ১ হাজার ৫৩৪ দশমিক ৯৪ কিলোমিটার গ্রাম সড়ক পুনর্বাসন করা, ৭৮ কিলোমিটার আরসিসি সড়ক পুনর্বাসন করা, ৬৯২ দশমিক ৩৭ মিটার (২৩৯টি) কালভার্ট পুনর্বাসন/ পুননির্মাণ করা এবং ৩২৮ কিলোমিটার বৃক্ষ রোপণ/ভেটিবার করা হবে।
এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনের মতামত হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, বন্যায় ও অতিবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী অবকাঠামোগুলো জলবায়ু সহনশীল টেকসই অবকাঠামো হিসেবে নির্মাণ করা হবে। সেই সাথে খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে অর্থনৈতিক গতিশীলতা আনয়নের ক্ষেত্রে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়া গ্রাম সড়ক, ইউনিয়ন সড়ক ও উপজেলা সড়ক এবং ব্রিজ/কালভার্ট পুনর্বাসন/পুনর্নির্মিত হলে পল্লী অঞ্চলের নিরবছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা সড়ক নেটওয়ার্ক এর সুফল নিশ্চিত, কৃষি-অকৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ সার্বিক দারিদ্র্য বিমোচনে প্রকল্পটি ইতিবাচক অবদান রাখবে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে