ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের উন্মুক্ত জলাশয়ের হুমকি ভয়ংকর সাকার ফিশ

বর্তমানে দেশের উন্মুক্ত জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ভয়ংকর সাকার ফিশ। এটি দ্রুত বংশবিস্তার ও প্রচুর খাদ্য গ্রহণের কারণে জলাশয়ের অন্যান্য প্রাটিগুলো ব্যাপক হুমকির মুখে পড়ছে। কিছুদিন আগেও পুকুর ও লেকে মাঝেমধ্যে এই মাছটির দেখা মিললেও বর্তমানে দেশের নানা নদনদী ও খালবিলে প্রতিনিয়ত পাওয়া যাচ্ছে এই মাছ।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের ঝাউচরের বাসিন্দা সুরুজ মিঞা জানান, অতীতে কখনও বুড়িগঙ্গায় এই মাছ দেখেননি তিনি। কিন্তু এখন জাল ফেললেই এই মাছ উঠে আসছে।

অপরদিকে ঝিনাইদহের শৈলকূপা পৌর এলাকার আউশিয়া গ্রামের পুকুর মালিক রশিদার রহমান বলেন, তিন-চার বছর আগে অন্য মাছের পোনার সাথে এই মাছটি পুকুরে আসে। বর্তমানে এই মাছের অত্যাচারে ব্যাপক অতিষ্ঠ তিনি। পুকুর থেকে কোনোভাবেই নিধন করা যাচ্ছে না। স্থানীয় নানা খাল-বিল, নদীতেও এই মাছ প্রচুর পরিমাণে দেখা যাচ্ছে।

এ ছাড়া নওগাঁ, নরসিংদী, পিরোজপুর, চুয়াডাঙ্গা, টাঙ্গাইল, নাটোর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ নানা জেলায় পুকুর ও উন্মুক্ত জলাশয়ে এই মাছ ছড়িয়ে।

বাংলাদেশে এই মাছের বিস্তার ব্যাপারে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ড. মো. খলিলুর রহমান জানান, ঢাকার গুলশান লেকে প্রথম এই মাছ পাওয়ার খবর পেয়েছিলাম। ১০-১২ বছর আগে মাছটি প্রথম দেশে আনেন একজন কূটনীতিক। তিনি নিজের অ্যাকুয়ারিয়ামের জন্য মাছটি এনেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়ার সময় সেই মাছ গুলশান লেকে ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তবে বর্তমানে প্রায়ই দেশের বিভিন্ন স্থানে এই মাছ পাওয়া যাচ্ছে। গুলশান লেক থেকে কীভাবে সারাদেশে মাছটি ছড়িয়ে পড়ল তা এখনও জানাতে পারেনি।

সাকার ফিশ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে তিনি জানান, মাছটির জীবনীশক্তি অনেক শক্ত। বিষ প্রয়োগে এই মাছ সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব নয়, জলাশয় একেবারে শুকিয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু উন্মুক্ত জলাশয় থেকে নির্মূলের উপায় এখনও জানিনা। সে ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন করতে হবে, যেন কোথাও মাছটি পাওয়া গেলেই সাথে সাথেই সেটি ধ্বংস করা হয়। এ ছাড়া সাকার ফিশ ধরার পর শুকিয়ে অন্যান্য মাছ ও পশুপাখির খাবারও তৈরি করা যায়।

সাকার ফিশের ব্যাপারে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ জানান, মাছটি উন্মুক্ত পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সেজন্য কোথাও উন্মুক্ত জলাশয়ে এই মাছ পাওয়া গেলে আমরা ধ্বংস করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। খুব শিগগির আমার মৎস্যচাষিসহ সাধারণ মানুষকে সাকার ফিশের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করতে কাজ শুরু করব।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন