শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত চলনবিলের মৎস্য শ্রমিকরা

বর্তমানে শুঁটকি তৈরিতে অনেক ব্যস্ত চলনবিলের মৎস্য শ্রমিকরা। বন্যার পানি কমার সাথে সাথে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের চলনবিলের সব মানুষ। এ অঞ্চলের ৩ শতাধিক শুঁটকি চাতালে দেশি প্রজাতির মাছের শুটকি তৈরি করছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।

জানা গেছে, চলনবিলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, গুরুদাসপুর, পাবনার চাটমোহর, ফরিদপুর, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, ভাঙ্গুড়া, নাটোরের সিংড়া, নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার নানা স্থানে শুঁটকি উৎপাদনে চাতাল তৈরি করেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।

শুটকি ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, বর্তমানে এ ব্যবসায় অনেক লাভ। দেশব্যাপী চলনবিলের মাছের শুঁটকির অনেক চাহিদা রয়েছে। পানি কমার সাথে সাথে বিল এলাকায় চলতি বছর প্রচুর পরিমাণে চিংড়ি, বাতাসী, টেংরা, পুঁটি, মলা, ঢেলা, চেলা, টাকি, বোয়াল, চিতল, শিলং, রুই, কাতলাসহ নানা ধরনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া এখন মাছের মুূল্যও অনেক কম। তাই সবাই শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে নানা চাতালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি চাতালে নারী-পুরুষ মিলে ১০-১৫ জন শ্রমিক শুটকি তৈরিতে কাজ করছে। তবে চাতালগুলোতে নারী শ্রমিকই বেশি। কারণ এ কাজে নারী শ্রমিকরাই বেশি দক্ষ বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

তারা বলেন, প্রতি ৩ কেজি কাঁচা মাছ থেকে এক কেজি শুঁটকি তৈরি হয়। প্রতি মণ কাঁচা মাছ চার হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা মূল্যে কেনা হয়। এসকল শুটকি প্রকারভেদে প্রতি মণ ১২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়। মাছগুলো চাতালে নেওয়ার পর বাজারজাত করতে মাসখানেক সময় লাগে।

আরও পড়ুনঃ  বন্যার পানিতে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার বড়পাঙ্গাসী এলাকার জেলে আইয়ুব আলী, শুকনো মৌসুমে তারা ক্ষেতে-খামারে কাজ করেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে কাজ না থাকায় রাতভর খরা জাল দিয়ে চলনবিলে মাছ শিকারের পর আড়তে বিক্রি করেন। সেই মাছগুলো যায় শুঁটকির চাতালে।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহেদ আলী বলেন, গেল বছর এ এলাকায় ৯৫ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর পোনা নিধন অভিযান জোরদার এবং বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় মাছের প্রাচুর্য বৃদ্ধি পেয়েছ। যে কারণে চলনবিল এলাকায় চলতি মাছের উৎপাদন আগের তুলনায় বেড়েছে। এ বছর শুঁটকি উৎপাদন আরো বাড়বে। মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন