মো. ফজলুল করিম মিরাজ
দেশরত্ন শেখ হাসিনা শুধু একটি নাম নয়, একটি চেতনার নাম। সাহসিকতায় তিনি বিশ্বে অনন্য। আমি এটা গর্ব করেই বলতে পারি- আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছে। তিনি রাষ্ট্রের মালিক নন, সেবক হয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন।
বিশ্বের সমস্ত বাঘা-বাঘা নেতারা বিশ্বমঞ্চে দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বৈশ্বিক মহামারি করোনা কিংবা ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস সামাল দিয়ে যাচ্ছেন সাহসিকতার সঙ্গে। তাইতো তিনি বিশ্ব দরবারে আলোচিত, আলোকিত।
করোনা মহামারিতে সবাই যখন জীবন মৃত্যু নিয়ে আতঙ্কিত তখন সাহস যুগিয়েছেন আমাদের আলোর দিশারী হয়ে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খবর রেখেছেন সারাদেশের। মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। জরুরি মেডিকেল সেবা চালু করে মানুষের চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করেছেন।
অর্থনীতি ও জীবন বাঁচাতে শেখ হাসিনার পদক্ষেপ
- দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা এবং পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।
- অনলাইন ও টেলিভিশনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা।
- চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনসহ করোনা যুদ্ধে ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধাদের জন্য পিপিই-মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী নিশ্চিত করা।
- টেস্টিং কিট আমদানি, দেশের বিভিন্ন স্থানে ল্যাব স্থাপনসহ পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা।
- করোনা মোকাবেলার ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের জন্য ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমা এবং এর ৫ গুণ জীবনবীমা ঘোষণা।
- ২ হাজার ডাক্তার ও ৫ হজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগ। আরও ৫ হাজার স্বাস্থ্য টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে।
- স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শের জন্য ৩টি হটলাইন (১৬২৬৩; ৩৩৩ ও ১০৬৫৫) চালু।
- করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভাগ, জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন।
- ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সংযুক্ত হয়ে জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া।
- করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে ১৯টি প্যাকেজে ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা। যা জিডিপি’র ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
- ভাতা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি ৮১১ কোটি টাকার, গৃহহীন মানুষের জন্য ঘর তৈরির জন্য ২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
- বোরো ধান/চাল ক্রয়ের কার্যক্রম (অতিরিক্ত ২ লাখ টন) ৮৬০ কোটি টাকার এবং কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ ২০০ কোটি টাকা।
- ভিজিডি, ভিজিএফ, ১০ টাকায় খাদ্য সহায়তা ও অন্য সহায়তা প্রাপ্ত প্রায় ৭৬ লাখ পরিবার বাদ দিয়ে অবশিষ্ট প্রায় ৫০ লাখ করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সালের মে মাসে এককালীন ২৫শ’ টাকা হারে মোট ১২শ’ ৫০ কোটি টাকা নগদ সহায়তা দেওয়া হয়।
- স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের ২০১৯ সালের ২ লাখ ৯ হাজার ৬৭৪ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে উপবৃত্তি বাবদ ১০২ কোটি ৭৪ লাখ ২ হাজার ৬শ’ টাকা এবং টিউশন ফি বাবদ ৮ কোটি ৬৬ লাখ ৪১ হাজার ২০০ টাকা বিতরণ।
- ৫০ লাখ মানুষের জন্য রেশন কার্ড করা আছে যারা ১০ টাকায় চাল পান। নতুন আরও ৫০ লাখ রেশন কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা। এতে প্রায় ৫ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন।
- কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে কৃষকদের জন্য আউশ ধানের বীজ ও সার বিনামূল্যে পৌঁছানোর উদ্যোগ।
- বোরো মৌসুমে ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান, ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আতপ এবং ৮০ হাজার মেট্রিক টন গমসহ সর্বমোট ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
- কৃষি যান্ত্রীকিকরণে অঞ্চলভেদে উপকরণ ক্রয়ের জন্য ৭০ শতাংশ পর্যন্ত সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।
- ৬৪ জেলার ত্রাণ কার্যক্রমের সমন্বয় সাধনের জন্য ৬৪ জন সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
- ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ। অভিযুক্ত জনপ্রতিনিধিদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
- শিশুখাদ্যসহ অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ের জন্য নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ১২৩ কোটি টাকা।
- করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে রমজান উপলক্ষে কওমি মাদ্রাসাগুলোকে ১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, মসজিদগুলোর জন্য ১২২ কোটি ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে।
- যে দেশ বা প্রতিষ্ঠান আগে ভ্যাকসিন উৎপাদন করবে, বাংলাদেশ তাদের থেকেই ভ্যাকসিন কিনে আনবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশ করোনার টিকা সরবরাহ করবে।
- গত সাত অক্টোবর মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ভ্যাকসিন কিনে ফেলবে সরকার। বিদ্যমান বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচীর মতোই এই ভ্যাকসিন বিতরণ করা হবে।
সরকার নিজস্ব খরচে ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বছরের শেষের দিকে বৃহৎ পরিমাণে ভ্যাকসিনের বাণিজ্যিক উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী সবসময় মাঠে আছে। করোনার শুরু থেকে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ছাত্রলীগ। একদম শুরু থেকে নিয়ে আজ-অব্দি নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে দেশের মানুষের জন্য।
ছাত্রলীগ বাংলাদেশের প্রথম ছাত্রসংগঠন, যারা করোনার শুরু থেকে মাস্ক বিতরণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ ও সতর্কীকরণ লিফটে বিতরণ করে যাচ্ছে। অসহায় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে বিনা মূল্যে। টাকার অভাবে কৃষকের যখন কপালে হাত তখন ছাত্রলীগ কাস্তে হাতে কৃষকের মাঠের ধান কেটে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে। তাইতো মহান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের প্রশংসা করেছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথে অটুট থেকে প্রতিটি ছাত্রলীগ নেতাকর্মী তাদের জীবন অতিবাহিত করছে। ক্ষমতার খুব কাছে থেকেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করে না। সবসময় ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী অপেক্ষায় থাকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনার। নেত্রী যে নিদর্শনা দেয় তা বাস্তবায়নে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে কখনো সংকোচ করে না ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এমন একটি সংগঠনের একজন কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। যতদিন থাকবে শেখ হাসিনার হাতে দেশ, পথ হারাবে না প্রিয় বাংলাদেশ।
লেখক:
মো. ফজলুল করিম মিরাজ
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ