ঢাকা শহরে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন নওগাঁর আব্দুল জলিল। একটা নির্দিষ্ট সময় পরই গ্রামের বাড়িতে ফিরতেন। আসা-যাওয়ায় কাজে মন টিকতো না তার। এক প্রকার বাধ্য হয়ে রাজমিস্ত্রীর কাজ ছেড়ে দেয়। এরপর গত জানুয়ারী মাসে নিজ গ্রাম নওগাঁর মান্দা উপজেলার বড়পই চলে আসেন।
গ্রামে ফিরে এসে কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন আব্দুল জলিল। প্রায় তিন বিঘা জমি ইজারা (চুক্তি) নিয়ে রানী জাতের করলার আবাদ শুরু করেন তিনি। বাজারে ভাল দাম পেয়ে খুশি তিনি। করলা চাষ আজ রাজমিস্ত্রি জলিলের ভাগ্যের বদল ঘটিয়েছে।
চাষি আব্দুল জলিল বলেন, গত ১৩ বছর ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করেছেন। সেখানে স্বল্প পরিসরে খাবার জন্য শাক-সবজির আবাদ করতেন। মাঝে মধ্যে বাড়ি আসা-যাওয়া করতে হতো। এবার আর ঢাকায় কাজ করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জমি বন্ধক নিয়ে গ্রামে তিনি শাক-সবজি চাষ করছেন।
দুই দফায় পুনে তিন বিঘা জমি ইজারা নিয়েছেন। ২২ কাঠা জমি ২ বছরের জন্য নিয়েছেন ৩২ হাজার টাকায়। বাকী জমি ১৪ হাজার এবং ১৬ হাজার টাকা বছর। মোট জমি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন। এ বছর এক বিঘা জমির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, জমি প্রস্তুত করে গত ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহে জমিতে করলার চারা রোপন করেন। মাঝে মাঝে বৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। সুযোগ বুঝে এরই মাঝে মাঁচা তৈরী করে চারা রোপন করেন। এক বিঘা জমিতে বাঁশ ও সুতা দিয়ে মাঁচা তৈরীতে এবং শ্রমিকসহ খরচ হয়েছে ২৬-২৭ হাজার টাকা। মোট জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা।
চারা রোপনের ২০ দিনের মধ্যে ফুল এবং ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে ফল ধরা শুরু হয়। সপ্তাহে ২ দিন ক্ষেত থেকে প্রায় সাড়ে ৭ মণ করলা উঠানো হয়। যেখানে প্রথম দিকে ৩ হাজার টাকা মণ পাইকারী দাম পাওয়া গিয়েছিল। বর্তমান বাজারে করলা বিক্রি হচ্ছে ২৪শ-২৬শ টাকা মণ। সর্বোচ্চ সাড়ে তিনমাস পর্যন্ত এ মাঁচায় করলা থাকবে। এরপর পটল। সব খরচ বাদ দিয়ে করলা মৌসুমে সাড়ে তিন মাসে তার প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ থাকবে।
আনন্দবাজার/ এম.কে/না.আ.অ