ঢাকা | বুধবার
২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরার উৎসব

প্রতি বছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দুই ইউনিয়নের আকচা ও চিলারংয়ে অবস্থিত শুক নদীর বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরা উৎসব। শনিবার (১৯ অক্টোবর) বুড়ির বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় এ উৎসবে যোগ দিয়েছে আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার জেলেসহ সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাছ ধরার জন্য গ্রাম এবং শহরের শত শত মানুষ  শুক নদীর বুড়ির বাঁধে আসে। নারী, পুরুষ ও শিশুসহ বৃদ্ধরাও রয়েছেন এ দলে। সবাই জাল, পলো, খোচা ও লাফিজাল নিয়ে নেমে পড়েছেন। এছাড়া যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও বসে নেই। খালি হাতেই কাদার মধ্যে মাছ খুঁজছেন।

আর নদীর পাড়ে হাজারো মানুষ ভিড় জমিয়েছে মাছ ধরা দেখতে। অনেকে মাছ না ধরলেও বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের উৎসাহ দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে এখানে এখন চলছে মাছ ধরার ধুম উৎসব।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮০ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষিজমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আচকা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় শুক নদীর ওপর একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানি আটকে রাখা হয় ওই এলাকার উঁচু জমি চাষাবাদ করার জন্য।

আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতি বছর ঠাকুরগাঁও মৎস্য অধিদপ্তর বিভিন্ন মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। আর শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব।

এ সময় মাছ শিকারীরা ফিকা জাল, লাফি জাল, কারেন্ট জাল, চটকা জালসহ বিভিন্ন মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে আসে মাছ শিকার করার জন্য আসেন বুড়ির বাঁধে।

সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে এসেছেন আবুল কাশেম। তিনি বলেন, মাছ ধরা উৎসবের কথা শুনে গতকাল রাতে এখানে এসেছি। পুঁটি মাছ, গুঁড়া মাছ, রুই মাছসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ জালে আটকা পড়তে দেখেছি।

বড়গাঁও ইউনিয়ন থেকে আসা মতিউর রহমান বলেন, প্রতিবছর বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার জন্য এ দিনটির অপেক্ষা করি।

রুহিয়া থেকে মাছ কিনতে আসা সুমাইয়া বলেন, এখানে টেংরা, গোচি, শিং, ট‍ুনা মাছ প্রতি কেজি ৪০০-৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর শোল ও রুই-কাতল মাছ চাওয়া হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪শ’ টাকা। প্রতি কেজি পুঁটি মাছ ২০০-২৫০ টাকা।

আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ জানান, বর্ষাকালে পানি ধরে রাখার পর কার্তিক মাসের প্রথম দিকে বুড়ির বাঁধের গেট খুলে দেওয়া হয়। এতে উজানের পানি কমে যায়। আর শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে শত শত মানুষের মিলনমেলা ও মাছ ধরার উৎসব।

আনন্দবাজার/খলিফা

সংবাদটি শেয়ার করুন