ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উলিপুরে এতিমদের ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক এতিমখানা ও লিল্লাহ্ বোর্ডিং এর বরাদ্দকৃত প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। অনিয়ম, দূর্নীতি ও আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হওয়ায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালে উপজেলার গুনাইগাছ জুম্মাহাট হাফিজিয়া ক্বারীয়ানা মাদ্রাসা আদর্শ এতিমখানা ও লিল্লাহ্ বোর্ডিং এর তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব, ক্যাশিয়ার তাজুল ইসলাম, ক্বারী হাবিবুর রহমান স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে মাদ্রাসার লক্ষ লক্ষ টাকা তছরুপ করে। এ বিষয়ে কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ প্রতিবাদ করলে আবু তালেব ও তার লোকজন তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানী করেন। এক পর্যায়ে আবু তালেব তার পক্ষের লোকজন দিয়ে গত ২ডিসেম্বর/১৮ তারিখে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে গোপনে কমিটি গঠন করে। পরে কৌশলে নতুন কমিটির বিষয়টি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবহিত না করে পূর্বের কমিটির মাধ্যমে ২০১৯ সালের ক্যাপিটেশনের ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ করেন।

এ ঘটনা জানতে পেয়ে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি তদারকির জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি নিরীক্ষা কমিটি গঠন করেন। নিরিক্ষা কমিটি তদন্তকালে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টির দালিলিক প্রমাণ পান। নতুন কমিটির মেয়াদ শেষ হলে সভাপতি গোলাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব যোগসাজশে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বাড়িতে বসে কমিটি গঠন করে চলতি বছরের ক্যাপিটেশনের ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় একর জমি ৫ লাখ টাকা বন্ধক এবং মাদ্রাসার ৩২টি ইউক্লিপ্টাস গাছ ৪১ হাজার ৫ ’শ টাকায় বিক্রি করে কোন হিসাব না দিয়েই সভাপতি ও সম্পাদক সেটিও আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগ আরও রয়েছে, ওই এতিমখানায় কাগজে কলমে ৩০জন এতিম শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে রয়েছে ১১ জন। এছাড়াও এতিম শিশুদের জন্য খাদ্য বাবদ ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও ডাল-সবজি ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। পোশাকের জন্য ৪৬ হাজার ৮শ’ টাকা বরাদ্দ থাকলেও তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এতিমরা। সব মিলিয়ে ১৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের পক্ষে আতিকুর রহমান সহ অনেকেই এই অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন। অভিযোগের ব্যাপারে ওই সাধারণ সম্পাদক আবু তালেবের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

কোষাধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম মুঠো ফোনে বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি গোলাম হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। একটি চক্র তাকে জড়িয়ে এমন মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আনন্দবাজার/শাহী/সেলিম

সংবাদটি শেয়ার করুন