ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চকরিয়ায় দুর্গাৎসবকে ঘিরে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা

শরতের শিশির ভেজা ধরণীতে মা দুর্গা মর্ত্যলোকে আসছেন শান্তির বার্তা নিয়ে। আগামী ২২ অক্টোবর থেকে ৫ দিনব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আরম্ভ হবে। কক্সবাজারের চকরিয়ায় শারদীয় দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে প্রতিমা গুলোকে আরও সুদৃশ্য করে তুলতে রং তুলিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরীর কারিগরেরা। তাদের নিপুন হাতের ছোঁয়ায় তৈরী হচ্ছে অসাধারণ সুন্দর প্রতিমা গুলো। পূজা উৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে পূজা মণ্ডপ গুলোতে চলছে ব্যাপক সাজসজ্জার প্রস্তুতি। তার সাথে পূজা কমিটি ও প্রশাসনের সকল প্রস্ততি সম্পূর্ন হয়েছে।

অন্যদিকে প্রতিমার পাশাপাশি শারদীয় দুর্গা পূজাকে জাঁকজমকপূর্ণ করে তুলতে বাদ্যযন্ত্র ঠিক ও তৈরী করতে ব্যস্ত সময় পার করছে ঢাক, ঢোল, কাঁশি, বাঁশি বাদ্যকাররা।

এদিকে দেবীকে স্বাগত জানাতে সর্বত্র আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে সনাতন সম্প্রদায়ের সব ধরনের শ্রেণী পেশার নারী-পুরুষদের মধ্যে। সব মিলিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে চকরিয়ায় প্রতিটি পূজা মন্ডপে।

চকরিয়া উপজেলা পূজার মণ্ডপ গুলো ঘুরে দেখা গেছে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়া অনুষ্ঠিত হবার পরপরই মন্দির গুলোতে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। এ বছর ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠিকতা। চলবে আগামী ২৬ অক্টোবর পযর্ন্ত। প্রতিমার মাটির কাজ শেষ হয়ে এখন চলছে রং এর কাজ। রং তুলির টানে প্রতিমাগুলো ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। আর এসব প্রতিমা তৈরীতে দম ফেলার সময় নেই প্রতিমা শিল্পীদের। এবছর মহাষষ্ঠীতে দোলায় চড়ে পৃথিবীতে আসবেন মা দুর্গা। আর পূজার সকল আনুষ্ঠিকতা শেষে গজে (হাতি) চড়ে কৈলাশে ফিরবেন দেবী দুর্গা। ৩ দিন পরেই ঢাকের বাজনা, উলুধ্বনি আর আরতীতে মুখরিত হয়ে উঠবে পাড়া-মহল্লা থেকে গ্রাম।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কান্তি দাশ বলেন, এবছর চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভায় মোট ৮৮টি মন্দিরে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২২ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গা পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা, এজন্য চকরিয়ায় পুরোদমে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ইতোমধ্যেই প্রতিমা তৈরির ৯০ ভাগ কাজ শেষে হয়েছে।

তিনি আরো জানান, পূজা মন্ডপ গুলোর সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আনসার, গ্রাম পুলিশ সার্বক্ষনিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। শান্তিপূর্ণ ভাবে দুর্গা উৎসব পালনের লক্ষ্যে পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে পৌরসভা ও উপজেলায় ৮ টি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।

এই মনিটরিং টিম পূজা চলাকালীন সময় পূজা মন্ডপের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করবে এবং সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার ও আহবান জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে আইন শৃংখলা বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। অন্যান্য বছরের চাইতে এবার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। তবে এবার প্রতিটি পূজার মন্ডপে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক সাধ্য অনুযায়ী রাখতে হবে। একসাথে জটলা পাকানো যাবে না, সন্ধ্যা আরতি চলাকালে কোন উশৃংখল আচরণ, লাফালাফি, ডিজে অনুষ্ঠান পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে পূজা মণ্ডপগুলোতে।

এছাড়াও প্রতিটি পূজামন্ডপে সার্বক্ষনিক নজর রাখতে ২টি স্পেশাল মোবাইল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৬ জন আনসার প্রতিটি পূজার মণ্ডপ গুলোতে থাকবে। তবে এ জন্য তিনি সকল স্তরের মানুষের সহযোগীতাও কামনা করেন।

আনন্দবাজার/শাহী/রাজু

সংবাদটি শেয়ার করুন