রাজধানীর ঝুলন্ত তারের সমস্যা সমাধানে বেশ কিছুদিন ধরেই ইন্টারনেট ও কেবল টিভি নেটওয়ার্কের তার অপসারণ করে আসছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। বিনা নোটিশ এই তার অপসারণের কারণে বিপাকে পড়েছে ইন্টারনেট ও কেবল টিভি নেটওয়ার্ক প্রভাইডাররা।
বিনা নোটিশে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে ইন্টারনেট ও কেবল টিভি নেটওয়ার্কের তার অপসারণের সিদ্ধান্ত থেকে ডিএসসিসি সরে না এলে রবিবার থেকে প্রতিদিন তিন ঘণ্টা করে দেশজুড়ে এই দুটি সেবা বন্ধ রাখবে আইএসপিএবি ও কোয়াব।
এর আগে গত সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে তার অপসারণ সমস্যার সমাধান দাবি করে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ও কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। দাবি পূরণ না হলে সারা দেশে সকল পর্যায়ে ইন্টারনেট ডাটা কানেক্টিভিটি এবং কেবল সংযোগ বন্ধ রাখবে তারা।
কর্মসূচি অনুযায়ী, রবিবার থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সারাদেশে এই দুটি সেবা বন্ধ রাখা হবে।
পরিকল্পনাহীন এসব তার অপসারণে শুধু অর্থনৈতিকভাবেই নয়, স্থবির হয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে দাফতরিক কার্যক্রমও। এমনকি কেবল অপারেটররা ধর্মঘট শুরু করলে পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বাংলাদেশ। যেকারণে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে সব পক্ষ।
জনদুর্ভোগের বিষয়ে জানানোর পরও থেমে নেই ঝুলন্ত তার অপসারণের এই অভিযান। নেয়া হয়নি সমস্যা সমাধানের বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও। হঠাৎ ইন্টারনেট কিংবা স্যাটেলাইট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন রাজধানীর লাখ লাখ মানুষ। দেশের দুই শেয়ারবাজারের লেনদেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমনকি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যক্রমও হচ্ছে বাধাগ্রস্ত। নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট না পেলে বন্ধ থাকবে এটিএম সেবাও। এতে শত শত কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছেন প্রযুক্তিবিদরা।
আইএসপিএবির সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, আমরা যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি, তা অপরিবর্তিত রয়েছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।
কোয়াবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আনোয়ার পারভেজ বলেন, আমরা আশা করছি, সিটি মেয়র ও সরকার এই সমস্যা সমাধানে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নেবে।
সংগঠন দুটির দাবি, লাস্ট মাইল কেবলের স্থায়ী সমাধান না করা পর্যন্ত কোনো ঝুলন্ত কেবল বা তার অপসারণ করা যাবে না। আইএসপিএবি, কোয়াব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) ও সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে লাস্ট মাইল কেবল স্থাপন করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে একটি কমিটির মাধ্যমে সরেজমিনে গিয়ে তদন্তের ব্যবস্থা করতে হবে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস