বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) ধর্মপাশা উপজেলা শাখা ব্যবস্থাপক মো. রিপন মিয়ার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাঁর দ্রুত অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন তালুকদারের সঙ্গে অশুভ আচরণ ও সাদা কাগজে ঋণ পরিশোধের মুচলেকা রাখার জন্য ওই মুক্তিযোদ্ধার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।
এছাড়া কৃষি ব্যাংকের ধর্মপাশা শাখা থেকে কৃষি, গবাদি পশু ও মৎস্য চাষ খাতে ঋণ নিতে কৃষকদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগও উঠেছে ওই ব্যবস্থাপকের নামে।
বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি এম আর খান পাঠান, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোবারক হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুজ্জাদ আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক হাসান আহমেদ রিযাদ, পাইকুরাটি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. নূরুজ্জামান, ভুক্তভোগী কৃষক ফারুক মিয়া, জুরাইন মিয়া প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ধর্মপাশা শাখা কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মানুষজন ওই ব্যাংক ব্যবস্থাপকের দ্রুত অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ধর্মপাশা শাখা ব্যবস্থাপক রিপন মিয়া খুবই উশৃঙ্খল প্রকৃতির লোক। তাঁর বাড়ি নেত্রকোনা জেলায় হওয়ায় তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটান। ব্যাংকে আসা মানুষজন তাঁর দূর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ। টাকা উৎকোচ পেলে তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ দেন। আর টাকা উৎকোচ না পেলে কাগজপত্রে ভুল ধরে তিনি কৃষকদেরকে বিদায় করে দেন। তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওই ব্যাংক ব্যবস্থাপকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাঁর দ্রুত অপসারণের দাবি জানান।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার রুহুল আমিন তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ওই ব্যাংক ব্যবস্থাপকের আচরণ খুবই অশোভনীয়। এই বৃদ্ধ বয়সে তাঁর কাছ থেকে আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি। যা এখনো আমি মেনে নিতে পারছি না। শুধু আমি নই এলাকার অনেকেই তাঁর একঘুয়েমি ও খারাপ ব্যবহারের কারণে অতিষ্ঠ। তিনি টাকা উৎকোচ না নিয়ে ঋণ সহায়তা দেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাই তাঁকে দ্রুত অপসারণ না করা হলে ভবিষ্যতে কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ধর্মপাশা শাখা ব্যবস্থাপক মো. রিপন মিয়া তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমি কারও কাছ থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা নিইনি। এমনকি ওই মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গেও আমি কোনো অশোভন আচরণও করিনি। এরপরও তিনি আমার পিতৃতুল্য তাই আমার কোনো ভুল হয়ে থাকলে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা,বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
ইউএনও মো. মুনতাসির হাসান সাংবাদিকদের বলেন, আমিসহ আরও অনেকের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ধর্মপাশা শাখা ব্যবস্থাপক সাবেক ওই মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। ওই ব্যাংক ব্যবস্থাপকের বদলি বা তাঁকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার কোনো এখতিয়ার আমার নেই।
আনন্দবাজার/ইউএসএস