ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈয়দপুরে পানিতে ভেসে গেল লাখ লাখ টাকার মাছ

অবিরাম অতি বর্ষনে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে পানির তোরে। শহর ও গ্রামাঞ্চলের মৎস্যচাষীদের পুকুরসহ বিভিন্ন জলাশয়ে সদ্য অবমুক্ত করা পোনা মাছ সহ অনেকের প্রাপ্তবয়স্ক বিপুল পরিমান মাছ হারিয়ে গেছে বৃষ্টির পানিতে।

কিন্তু এ ব্যাপারে কোন তথ্যই নেই উপজেলা মৎস্য অফিসে। খোদ মৎস্য কর্মকর্তাই জানেন না ক্ষতিগ্রস্থ মাছ চাষীদের সংখ্যা বা মাছের পরিমান। ফলে ক্ষতির শিকার মাছ চাষীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। কারণ উপজেলা মৎস্য বিভাগ থেকে কোন প্রকার খোজ খবরও নেয়া হয়নি তাদের। সে সাথে নিজ উদ্যোগে ক্ষতির কথা জানালেও তাদের পক্ষ থেকে কোন আগ্রহই দেখাইনি কর্মকর্তারা।

জানা যায়, গত ৫ দিনের প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে উপজেলার পৌর এলাকাসহ পাঁচটি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে দূর্ভোগে পড়ে। যাাদের মধ্যে এখনও অনেকেই হাটু পর্যন্ত পানিতে ডুবে আছে। এ দূর্যোগের সময় ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষি জমির ফসলসহ মৎস্য খামার ও জলাশয়গুলো। উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের ছোট ছোট ডোবা-নালা, খাল-বিল পানিতে টইটুম্বুর। এসব জায়গায়ও অনেকে মাত্র কয়েকদিন আগে মাছের পোনা ছেড়েছে চাষ করার জন্য। এর পাশাপাশি মাছ চাষীরা তাদের পুকুর বা মৎস্য খামারেও নিয়মিত চাষকৃত মাছের সাথে নতুন করেও পোনা ছেড়েছে।

এই পুকুর বা জলাশয়গুলোর মাছ যাতে পানি বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নিয়েও অনেকে রক্ষা করতে পারেনি। রেকর্ড পরিমান বৃষ্টির ফলে এক রাতেই সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। রাতেই অনেক পুকুর ও মৎস্য খামারের পাড় ভেঙ্গে বা জালের বেষ্টনি তছনছ হয়ে সিংহভাগ মাছ ভেসে যায়। এতে চরমভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে মৎস্য চাষীরা।

উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ঝাড়–য়া চৌধুরীপাড়ার ওয়াদ আলী মেম্বার জানান, তিনি এ বছর আড়াই একর জমির পুকুরে মাছ চাষ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে দেশীয় বিভিন্ন জাতের বড় মাছ। যা আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই আহরণের উপযুক্ত ছিল। তাছাড়া কয়েকটি পুকুরে নতুন করে পোনা ছাড়া হয়েছে। এই পোনা মাছসহ বড় মাছও ভেসে গেছে বৃষ্টির পানিতে। এতে তিনি প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।

একই ইউনিয়নের ছৈইল গ্রামের আব্দুল হালিমের ৬৫ শতক পুকুরের প্রায় ৩০ হাজার টাকার মাছও পাড় উপচে পানির সাথে বেড় হয়ে গেছে। এভাবে আশে পাশের আরও অনেকের পুকুর থেকে মাছ বৃষ্টির পানিতে চলে যাওয়ায় তারা ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাছ চাষীদের প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এর পাশাপাশি উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নেও মাছ চাষীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। সব মিলে পুরো উপজেলায় প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এসব ক্ষতিগ্রস্থ মাছ চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, মাছ চাষের ক্ষেত্রে যেমন উপজেলা মৎস্য অফিসের কোন সহযোগিতা পাইনা, তেমনিভাবে দূর্যোগ মূহুর্তেও তাদের কোন ভুমিকাই নেই।

আনন্দবাজার/শাহী/মনন

সংবাদটি শেয়ার করুন