রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম ভার্চুয়াল অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ১১ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত মিয়ানমারের নাগরিককে আশ্রয় প্রদান করেছে। তিন বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি। রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ ব্যাপারে আরও কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯ মহামারির কারণে বিদ্যমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসমূহ আরও প্রকট হয়েছে। এ মহামারি আমাদের উপলদ্ধি করতে বাধ্য করেছে যে, এ সঙ্কট উত্তরণে বহুপাক্ষিকতাবাদের বিকল্প নেই। জাতিসংঘের ৭৫তম বছরপূর্তিতে জাতিসংঘ সনদে অন্তর্নিহিত বহুপাক্ষিকতাবাদের প্রতি আমাদের অগাধ আস্থা রয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে বহু প্রতিকূলতার মধ্যেও বহুপাক্ষিকতাবাদের আদর্শ সমুন্নত রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রতি বছরের মত এ বছরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলায় এই ভাষণ দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৯তম অধিবেশনে প্রথম বাংলায় ভাষণ দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন।
ভাষণে কভিড-১৯ সংক্রমণ, রোহিঙ্গা সংকট এবং জলবায়ুসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি, ভ্যাকসিনের সমবণ্টন এবং প্রবাসী শ্রমিক ও রেমিটেন্সের ওপর এর প্রভাব তুলে ধরেন তিনি। জলবায়ু ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে জলবায়ু ইস্যুটিও তিনি তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী কভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য, এসডিজি বাস্তবায়ন, নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠা, দারিদ্র্য বিমোচন, সন্ত্রাস দমন, মাদক চোরাচালান বন্ধ, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, টেকসই গণতন্ত্র, সুশাসন এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের ভূমিকা তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘আমরা ভবিষ্যৎ চাই, জাতিসংঘ আমাদের প্রয়োজন: বহুমুখীতার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিতের মাধ্যমে।’
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস