জীবিকার তাগিদে প্রতি বছর লাখ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসে পাড়ি জমান। এর মধ্যে গত ২৭ বছরে লাশ হয়ে ফিরেছেন ৩৮ হাজারের বেশি প্রবাসী। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
যারা প্রবাসে যান তাদের অধিকাংশই হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করেন। তবে তারা কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় কিংবা জটিল অনেক রোগে ভুগে মৃত্যুবরণ করেন।
জানা গেছে, ১৯৯৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত বিশ্বের নানা দেশ থেকে মোট ৩৮ হাজার ২৪ জনের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আর চলতি বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গেল আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এক হাজার ৬৯৮ জন প্রবাসীকর্মীর লাশ দেশে ফেরত এসেছে। নানা দেশ থেকে আসা প্রবাসীকর্মীর লাশের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও বেশি লাশ মাত্র দুটি দেশ-সৌদি আরব এবং মালয়েশিয়া থেকে এসেছে।
১৯৯৩ থেকে জুলাই ২০২০ সাল পর্যন্ত পরিসংখ্যানে ফেরত আসা প্রবাসীকর্মীদের লাশের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫৩ জন, ১২৮ জন, ২৪১ জন, ১৯৯ জন, ২৭৪ জন, ২৪৮ জন, ২৮৮ জন, ৪১২ জন, ৩৮৫ জন, ৫৯৭ জন, ৫১৯ জন, ৭১৬ জন, ৬৯১ জন, ৭১৮ জন, ৯৬৬ জন, এক হাজার ১৩৩ জন, এক হাজার ৩৬৪ জন, দুই হাজার ২১২ জন, এক হাজার ৮৬৯ জন, দুই হাজার ২০১ জন, দুই হাজার ৪১৯ জন, দুই হাজার ৭১৮ জন, দুই হাজার ৬৯৫ জন, দুই হাজার ৯৫১ জন, তিন হাজার ২৬৩ জন, তিন হাজার ৬৭৬ জন, তিন হাজার ৬৫৮ জন এবং এক হাজার ৪৩০ জন।
এই ব্যাপারে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উপ-পরিচালক (গবেষণা, পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ) জাহিদ আনোয়ার জানান, প্রবাসী শ্রমিকদের কেউ মারা গেলে তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে ওই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। লাশ ফিরে এলে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর লাশটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এমনকি লাশ দাফনের জন্য ৩৫ হাজার ও আর্থিক সহায়তা হিসেবে তিন লাখ টাকার চেক দেয়া হয়।
তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি বছর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় প্রবাসী শ্রমিকদের লাশ বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক কম এসেছে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে