ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিলে দেশে পেঁয়াজের বাজার ব্যাপক অস্থির হয়ে উঠে। ৫০-৬০ টাকার পেঁয়াজের মূল্য উঠে ১১০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য হতে জানা যায়, বর্তমানে দেশে প্রায় ছয় লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা ভারতের রফতানি বন্ধ করাকে পুঁজি করে পেঁয়াজের মূল্য বাড়িয়েছে। তাই এসব সুযোগসন্ধানী সিন্ডিকেটকে খুঁজে বের করতে দেশের চার জেলাকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে সরকার।
এই ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ‘ভারতের মূল্য বৃদ্ধির কথা শুনেই চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতেই দেশের বাজারে পেঁয়াজারে মূল্য কিছুটা বেড়ে যায়। তাই চলতি বছর শুরু থেকেই পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ব্যাপক তৎপর ছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি টিম দেশের নানা প্রান্তে পেঁয়াজ মজুতের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে যায়। এসব টিম সরেজমিনে পরিদর্শন ও গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী এবং মানিকগঞ্জ- এ চার জেলায় প্রায় ছয় লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত রয়েছে।
ইতোমধ্যে এসব জেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার কড়া নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টিম জেলাগুলোর জেলা প্রশাসক ও স্থানীয়দের সাথে বৈঠক করবে। যাতে করে কোনোভাবেই এই অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ মজুত রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে।
এদিকে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ট্রাকে করে মাত্র ৩০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি। সেই সাথে ৩৬ টাকা কেজিতে অনলাইনের মাধ্যমেও পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে সরকারি এ সংস্থা। এছাড়া ভারত ও এর বিকল্প দেশ হিসেবে তুরস্ক, চীন, মিয়ানমারসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি বৃদ্ধির লক্ষে পেঁয়াজ আমদানির ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করেছে সরকার।
তবে ভারত থেকে আসা পেঁয়াজের বেশিরভাগই নষ্ট। এরপর রাত পার না হতেই গতকাল সোমবার পাইকারি বাজারে আবারও দেশি পেঁয়াজের মূল্য বেড়ে যায়। অবশ্য আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
ঢাকায় পেঁয়াজের সব থেকে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা জানা যায়, দেশি পেঁয়াজবিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা, যা গত দিন ছিল ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা। অপরদিকে ভারতের আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। তবে নষ্ট আমদানি করা পেঁয়াজ অনেক ব্যবসায়ীরা ৪০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করছেন।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে