শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শান্তির সুফল পৌঁছে যাক প্রতিটি মানুষের জীবনে

ফজলে রাব্বি ফরহাদ

আজ ২১শে সেপ্টেম্বর। আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস। জাতিসংঘ কতৃক প্রস্তাবিত একটি আন্তর্জাতিকভাবে পালিত দিন যা এর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত বিশ্বের সকল দেশ ও সংগঠন কতৃক যথাযোগ্য মর্যাদার সহিত পালিত হয়ে থাকে।

একটি যুদ্ধবিহীন বিশ্ব প্রতিষ্ঠার ( যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই স্লোগানে) লক্ষ্যে ১৯৮১ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত নম্বর ৩৬/৩৭ প্রস্তাব অনুসারে প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের “তৃতীয় মঙ্গলবার” জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু হওয়ার দিনটিকে “আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পরবর্তীতে, ২০০১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত ৫৫/২৮২ নম্বর প্রস্তাব অনুসারে ২০০২ সাল থেকে প্রতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর “আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস” হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আজ সারাবিশ্বে শান্তি দিবস আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হলেও কতটুকু শান্তি আজ বিশ্বে বিদ্যমান! আজ মায়ানমারের রোহিঙ্গারা নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। চীনের উইঘুর মুসলিম সমাজের উপর অবিরত নির্যাতনের স্টিমরোলার চলছে। লম্বা সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে সিরিয়াতে। খুব একটা সুখে নেই আজ ইরাক, আফগানিস্তান আর ফিলিস্তিনের মানুষ। আমেরিকার সহায়তায় ফিলিস্তিনের জনগণের নিজ ভূমিকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেছে ইসরায়েল। এত এত অশান্তির মধ্যে শান্তির নীড় খুজে বেড়াচ্ছে আজ বিশ্বের মানুষ।

আজ শাসকদের হৃদয় থেকে হারিয়ে গেছে মমত্ববোধ আর ভালোবাসা। যার কারণে ছোট্ট শিশু কিংবা গর্ভবতী মহিলাও তাদের বোমার আঘাত থেকে রেহাই পায় না। তাদের আর্তচিৎকারে শাসকদের মন গলে না। সেজন্য বিশ্বে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে সবার আগে আমাদের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা বিবেককে জাগ্রত করতে হবে। আমাদের হৃদয়ে মমত্ববোধ আর ভালোবাসার জন্ম দিতে হবে। তবেই স্বার্থক হবে বিশ্ব শান্তি দিবসের উদ্দেশ্য।

আরও পড়ুনঃ  গণপরিবহনের বেশি ভাড়া নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ !

বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার এই প্রতিকূল পরিবেশেও বাংলাদেশের জন্য সুখবর দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্সটিটিউট ফর ইকোনমিকস এন্ড পিস (আইইপি)। প্রতিবছর তারা বিশ্ব শান্তি সূচক প্রকাশ করে থাকে। বিশ্ব শান্তি সূচক-২০২০ এ দেখা যায়, বাংলাদেশ পূর্বের অবস্থান থেকে এ বছরে চার ধাপ এগিয়েছে। ১০১তম অবস্থান থেকে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৭তম। সর্বশেষ বছরে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করছে বাংলাদেশ। সামগ্রিক স্কোরে বাংলাদেশ ২.৩ শতাংশ উন্নতি করেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। সূচক নির্ধারণের প্রতিটি ডোমেইনে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে সুরক্ষা ও নিরাপত্তায়। আর গত বছরে বিরোধী দলগুলোর সহিংস কর্মকাণ্ডও কমেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। দেশের গার্মেন্টস শিল্পের কর্মপরিবেশের উন্নতি হয়েছে, যা সূচক নির্ধারণে বাংলাদেশের অবস্থানকে ত্বরান্বিত করেছে।

বিশ্ব শান্তি দিবসে এসে আজ বিশ্ববাসীর কামনা এটাই যে, সকল প্রকার কলুষতা আর শোষণের বানী দূর হোক পৃথিবীর বুক থেকে এবং শান্তি, সুখ আর সমৃদ্ধির বাণী ছড়িয়ে যাক পৃথিবীর প্রতিটি কোণে।

ফজলে রাব্বি ফরহাদ
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

আনন্দবাজার/শাহী/ফরহাদ

সংবাদটি শেয়ার করুন