ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কারিগরি জটিলতায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষকের বেতন

দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করার পর প্রায় আট মাস আগে জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে উন্নীত হন সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে তিন লাখ সহকারী শিক্ষক। যদিও তাদের দাবি ছিল ১১তম গ্রেড। তবে ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করা হলেও শিক্ষকরা এখনও সেই আগের বেতনই পাচ্ছেন। কারণ, তাদের বেতনভাতা এখনও ১৩তম গ্রেডে ফিক্সেশন (নির্ধারণ) করা হয়নি।

জানা গেছে, সরকারি কর্মচারীদের বেতনভাতা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত সফটওয়্যার ‘আইবাস’-এ কারিগরি জটিলতার কারণে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ করা যায়নি। এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম আল হোসেন জানান, সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন ফিক্সেশন যাতে দ্রুত কার্যকর হয়, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। প্রাথমিক শিক্ষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ১৩তম গ্রেডের নিম্ন ধাপে বেতন নির্ধারণ করলে আইবাস সফটওয়্যার তার সিস্টেমে ইনপুট নেয়। কিন্তু ১৩তম গ্রেডের উচ্চ ধাপে বেতন নির্ধারণ করলে আইবাসের সিস্টেম কোনো ইনপুট নিচ্ছে না। অথচ নিম্ন ধাপে বেতন নির্ধারণ করলে শিক্ষকদের বেতন কমে যাচ্ছে।

বর্তমানে সারাদেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন লাখ ৫২ হাজার সহকারী শিক্ষক কর্মরত। তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই নারী। জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করার পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি এই শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ১৩তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে এই গ্রেডের সুবিধাপ্রাপ্তি নিয়ে নানা জটিলতা দেখা দেয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের হস্তক্ষেপে ১৩তম গ্রেডের উচ্চ ধাপে বেতন ফিক্সেশন করায় সে জটিলতার সমাধান হলেও এবার নতুন করে সংকট তৈরি করেছে আইবাস সফটওয়্যার।

আগে শিক্ষকদের বেতন উন্নীত স্কেলের নিম্ন ধাপে ফিক্সেশন হতো। ফলে এতে বেশির ভাগ শিক্ষকের মূল বেতন কমে যেত। এ সমস্যা সমাধানে শিক্ষক সংগঠনগুলোর দাবির মুখে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন উচ্চ ধাপে ফিক্সেশনের নির্দেশনা আসে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যবহার করা আইবাস সফটওয়্যারে উচ্চ ধাপে ফিক্সেশনের সিস্টেম সংযুক্ত না করায় বেতন ফিক্সেশন আটকে গেছে।

এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (সদ্য অবসরে যাওয়া) মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ জানান, আইবাসের ইনপুট সিস্টেমে পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে কাজটি করা সম্ভব হবে।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন