এ বছর শিলাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডব, বন্যা ও করোনার প্রভাবে কাঁচা পাটের উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৫৫ লাখ বেল। যা এ বছরের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ১০ লাখ বেল কম হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি পাটকল মালিকরা এক বছরের জন্য কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ বা অতিরিক্ত শুল্কারোপের পরামর্শ দিয়েছেন। এতে পরোক্ষভাবে জড়িয়ে থাকা প্রায় চার কোটি মানুষের কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে পড়বে। এ বছর কমপক্ষে পাঁচ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা হারাবে গুরুত্বপূর্ণ এ খাতটি।
কিন্তু এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিচ্ছেন না দেশের কাঁচা পাট রফতানিকারকরা। পক্ষান্তরে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এখনও নির্বিকার বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ জুটমিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) জানায়, দেশে বিদ্যমান পাটকলের সংখ্যা ২৫৯টি। এই পাটকলগুলো পরিচালনায় বছরে প্রয়োজন হয় ৬০ লাখ বেল কাঁচা পাট। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কাজে আরও পাঁচ লাখ বেল পাটের প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে বছরে দেশের চাহিদা ৬৫ লাখ বেল। এ অবস্থায় কাঁচা পাট রফতানি হলে এই শিল্প সংকটে পড়বে।
পাট রফতানিকারক এম এ কাইয়ুম বলেন, পাটের উৎপাদন কম হওয়ায় চাহিদা বেশি। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এ বছর পাটের উৎপাদন কম হলেও তা চাহিদার তুলনায় কম নয়। তাই এমন অবস্থায় কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ করা ঠিক হবে না। এটি করলে বা রফতানি নিরুৎসাহিত করতে অতিরিক্ত শুল্কারোপ করলে সরকার বৈদেশিক আয় হারাবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচা পাটের দাম বেশি পড়ায় উৎপাদিত পাটপণ্যের খরচও বাড়বে। যা দিয়ে পাটপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হবে।
এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অবিলম্বে এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে দেশের রফতানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে পাটশিল্প।
আনন্দবাজার/ইউএসএস